সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে বালু তোলা বন্ধের দাবিতে সীতাকুণ্ডে মানববন্ধন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এলাকাবাসীর মিছিল। আজ দুপুরে তোলাছবি: স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের আলেকদিয়া এলাকার বাসিন্দারা। একই সঙ্গে সম্প্রতি কুমিরা উপকূলে একটি বাল্কহেড পোড়ানোর ঘটনায় হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিও তুলেছেন তাঁরা।

আজ রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে আলোকদিয়া গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলামকে এ বিষয়ে স্মারকলিপিও দেন এলাকাবাসী।

নৌ পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ ডিসেম্বর আলেকদিয়া গ্রাম এলাকায় সাগর উপকূলে একটি ড্রেজার ও বাল্কহেড নিয়ে আসা হয়। এ সময় ড্রেজারটি দিয়ে বালু তোলার প্রস্তুতি চলছে—এমন খবর এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ওই ড্রেজার ও বাল্কহেডে আগুন দেন। এ ঘটনায় পরদিন ১০ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ জনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর পুলিশ আলেকদিয়া থেকে এক বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করে। এর পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন স্থানে সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এতে এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে, মানুষের বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় এভাবে নির্বিচার বালু তোলা অব্যাহত থাকলে বাসিন্দারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বাল্কহেড পোড়ানোর মামলার প্রসঙ্গ তুলে বক্তারা বলেন, ‘মামলার পর পুরুষেরা রাতে ঘরে থাকতে পারছেন না। আমরা অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’

জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটির এখনো তদন্ত চলছে। মামলার কারণে নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না।

মানববন্ধনে অনেক নারীও অংশ নেন। আজ দুপুরে সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদ এলাকায়
ছবি: স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত

নৌ পুলিশের অভিযান

বালু তোলা বন্ধে সীতাকুণ্ডের সাগর উপকূলে গতকাল শনিবার বিশেষ অভিযান চালিয়েছে নৌ পুলিশ। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযানে চারটি ড্রেজার ও সাতটি বাল্কহেড আটক করা হয়। পরে এসব ড্রেজার ও বাল্কহেডের বিষয়ে মামলা করে নৌ পুলিশ।

কুমিরা নৌ পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ওয়ালি উদ্দিন আকবর প্রথম আলোকে বলেন, উপকূলীয় এলাকায় অবৈধ ও অনুমোদনহীন বাল্কহেড ও ড্রেজারের বিরুদ্ধে নৌ পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।