খুলনায় নিখোঁজের ১০ দিন পরও গৃহবধূর সন্ধান মেলেনি, গ্রেপ্তার ৫

খুলনা জেলার মানচিত্র

খুলনা নগরের দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা এলাকার বাসিন্দা রহিমা বেগম (৫০) নামের এক গৃহবধূ ১০ দিন ধরে নিখোঁজ আছেন। তাঁকে হন্যে হয়ে খোঁজার পাশাপাশি দৌলতপুর থানায় অপহরণের মামলা করেছেন তাঁর এক মেয়ে। মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

আসামিদের চারজনকে গতকাল রোববার ও একজনকে কয়েক দিন আগে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. মহিউদ্দীন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম ওরফে পলাশ, মো. জুয়েল ও হেলাল শরীফ। তাঁরা সবাই রহিমা বেগমের প্রতিবেশী। জমিজমা নিয়ে রহিমা বেগমের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ ছিল।

রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মা গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান। কিন্তু এক ঘণ্টা পরও তিনি বাসায় না ফেরায় তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নলকূপের পাশে তাঁর মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তাঁরা খুঁজে পাননি। এ ঘটনায় ওই রাতেই তাঁর ভাই দৌলতপুর থানায় একটি জিডি করেন। পরদিন তাঁর বোন আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া বিষয়টি র‍্যাবকেও জানানো হয়। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ পরিকল্পনার মাধ্যমে আমার মাকে অপহরণ করা হয়েছে। এখনো আমার মাকে খুঁজে পাইনি আমি। মাকে যারা অপহরণ করেছে, তারা অনেক ক্ষমতাধর।’

মরিয়ম মান্নানের অভিযোগ, জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কিছুদিন আগে তাঁর মা বাদী হয়ে আদালতে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার কয়েক দিন পর সন্ত্রাসীরা তাঁদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং তাঁর মা ও বোনকে মারধর করে। এ ঘটনায় তাঁর মা আরেকটি মামলা করেন। এরপর থেকে আসামিরা তাঁর মাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। ওই মামলার আসামিরা রোববার পর্যন্ত জামিনে ছিল। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার জন্য তাদেরই সন্দেহ করছে মরিয়মদের পরিবার।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণ ধরেই তাঁরা মামলাটির তদন্ত করছেন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন পাঁচজনের মধ্য থেকে আগেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রোববার রাতে বাকি চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ সোমবার আদালতের কাছে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে।