বরগুনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মেয়রসহ দুজনকে জরিমানার সুপারিশ

বরগুনা জেলার মানচিত্র

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করার অভিযোগে বরগুনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান এবং আমতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান আহমদ সাঈদ স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে নির্বাচন কমিশনের কাছে এ জরিমানার সুপারিশ করা হয়।

উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার আগেও একবার মেয়র মতিয়ার রহমানকে জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছিল।

অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারের প্রথম দিন প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে আমতলী পৌরসভার জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৬০০ থেকে ৭০০ মানুষের সমাগম করে নৌকা মার্কার নির্বাচনী পথসভা করা হয়। সেখানে মেয়র মতিয়ার রহমান ও তাঁর ভাই আমতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান ভয়ভীতি ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালান। মতিয়ার রহমান ও তাঁর ভাই মজিবুর রহমান বক্তব্যে বলেন, ‘আমতলী, তালতলী ও বরগুনা সদর নিয়ে গঠিত বরগুনা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি তাঁরা এজেন্ট দিতে পারবেন না।’ এমন কথা নির্বাচনী আচরণবিধিমালা লঙ্ঘনের শামিল।

এ ঘটনায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি উল্লেখ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম ছরোয়ার ফোরকানের পক্ষে মো. হুমায়ুন কবির নামের এক ব্যক্তি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের সত্যতা পায় অনুসন্ধান কমিটি। গতকাল দুজনকে একেকটি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানার সুপারিশ করেছে অনুসন্ধান কমিটি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আমতলী পৌরসভার মেয়র ও আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এই বিষয়ে তাঁর ভাই আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জরিমানার বিষয়ে আমরা কোনো ধরনের কাগজ পাইনি। এ ছাড়া আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভয় দেখানোর মতো কোনো বক্তব্য দিইনি।’

বরগুনা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আচরণ বিধি লঙ্ঘনের যে বিষয়গুলো আমরা সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে পারি, সেখানে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি সরাসরি নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত সুপারিশ করে থাকে। নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা পেলে সেই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’