নতুন সড়কের পিচ উঠে গেছে, ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ

বরগুনার আমতলী উপজেলার ডাক্তারবাড়ি স্ট্যান্ড থেকে গোছখালী অফিস বাজার পর্যন্ত সড়কটির পিচঢালাই উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার স্থানীয়রা সেখানে ধানের চারা রোপণ করে
ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডাক্তারবাড়ি স্ট্যান্ড থেকে গোছখালী অফিস বাজার পর্যন্ত সড়কের নির্মাণকাজ এক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার দুই দিন পর থেকেই সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে, সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। এর প্রতিবাদে বুধবার খেকুয়ানী গাজী বাড়ির সামনে ধানগাছের চারা রোপণ করেছেন এলাকাবাসী।

গুলিশালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে সড়কে কাজ করেছেন। ফলে কাজ শেষ হওয়ার পর এত অল্প দিনের মধ্যে সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে গেছে। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানাতে বেশ কয়েকবার কল করেছেন। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। কাজের শুরুতে ঠিকাদারের অনিয়মের প্রতিবাদ করতে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার কোনো কথাই আমলে নেননি। উল্টো যাঁরা প্রতিবাদ করেছেন, তাঁদের নামে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিয়েছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডাক্তারবাড়ি স্ট্যান্ড থেকে গোছখালী অফিস বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ২ কিলোমিটার ৮০০ মিটার। এই সড়কের কার্যাদেশ পান হলদিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা। দরপত্র অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা। ঠিকাদার গত শুক্রবার কাজ শেষ করেন। অথচ সোমবার থেকেই সড়কের বিভিন্ন স্থানের ইটের খোয়া ও বিটুমিন উঠে গেছে। খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

বাইনবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল বলেন, কাজের শুরু থেকেই ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা নিম্নমানের ইট, খোয়া, পাথর ও বিটুমিন দিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি এ অনিয়মের প্রতিবাদ করেন। এতে ঠিকাদার ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির মামলা করার হুমকি দেন।

পিচঢালাই উঠে গেছে নতুন সড়কের
ছবি: সংগৃহীত

অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। সড়ক নির্মাণের সামগ্রী আনা হয়েছে, দ্রুত সড়কের ওই সব স্থান মেরামত করে দেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ-আল-মামুনকে কল করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি বলেন, ওই সড়ক নির্মাণের সময় বৃষ্টি ছিল। বৃষ্টির মধ্যে কাজ না করার জন্য তাঁরা একাধিকবার বলেছিলেন। কিন্তু ঠিকাদার তাঁদের কোনো কথা শোনেননি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনো কোনো বিল পায়নি। সড়ক সংস্কার করে দেওয়ার পর তারা বিল পাবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, সড়কের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ঠিকাদার সড়ক সংস্কার না করে বিল নিতে পারবেন না।