ফেসবুক লাইভে সাংবাদিকের আত্মহত্যার চেষ্টা, দরজা ভেঙে উদ্ধার

পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইমন চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরে ইমন চৌধুরী নামের এক সাংবাদিক ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। একপর্যায়ে স্থানীয় সাংবাদিকেরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে শহরের সিআইপাড়ায় ইমনের বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে।

ইমন চৌধুরী একটি বেসরকারি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। সংবাদ প্রকাশের জেরে পিরোজপুর প্রেসক্লাবে ডেকে নিয়ে কয়েকজন সাংবাদিক তাঁকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেন ইমন। এতে ‘অপমানিত বোধ করায়’ তিনি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। তবে সাংবাদিক নেতারা বলছেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়ে তাঁকে সতর্ক করতে ডাকা হয়েছিল। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

ইমন চৌধুরী বলেন, তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দুর্নীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। ওই প্রতিবেদন বরিশাল ক্রাইম নিউজসহ কয়েকটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে দেন। এ কারণে পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হন। গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁকে সিআইপাড়ার বাসা থেকে কয়েকজন সাংবাদিক মোটরসাইকেলে করে পুরোনো প্রেসক্লাব ভবনে নিয়ে যান। এরপর তাঁকে কয়েকজন সাংবাদিক মারধর করেন।

ইমন চৌধুরীর স্ত্রী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, গতকাল রাত আটটার দিকে কিছু লোক দরজায় ধাক্কা দেন। দরজা খুললে তাঁরা ঘরে ঢুকে ইমনকে জোর করে নিয়ে যান। এরপর ইমন বাসায় ফিরে তাঁর কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। তিনি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ফেসবুক লাইভ দেখে কিছু মানুষ দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করেন।

পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিউল হক বলেন, ইমন চৌধুরী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক কর্মচারীর কাছে চাঁদা দাবি করেন। এ বিষয়ে প্রেসক্লাবে অভিযোগ এলে তাঁকে ডেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। ইমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখানো ও হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। গত এক মাসে কয়েক ব্যক্তি এ অভিযোগ করেছেন। তাই তাঁকে সতর্ক করার জন্য প্রেসক্লাবে ডাকা হয়েছিল। মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি ফেসবুক লাইভে গিয়ে আত্মহত্যার নাটক করেছেন। লাইভ দেখে ঘরের দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা ইমন চৌধুরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেননি।