চ্যাম্পিয়ন পেলেন গরু, খাসি রানার–আপের

কুমিল্লায় স্থানীয় সমাজকল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে রাতভর চলে কুস্তি প্রতিযোগিতা। গতকাল শুক্রবার রাতে হোমনা উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের মাঠেছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের মাঠে ঐতিহ্যবাহী কুস্তি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার হোমনা, মেঘনা, তিতাস, দাউদকান্দি উপজেলার হাজারো মানুষ রাতভর এ খেলা উপভোগ করেন।

হোমনা উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের কলাকান্দি গ্রামের সমাজকল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে আজ শনিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত এ কুস্তি খেলা চলে। রাতে বেলুন উড়িয়ে কুস্তি খেলার উদ্বোধন করেন হোমনা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম।

আয়োজকেরা জানান, প্রতিবছর কলাকান্দি গ্রামের মাঠে এই কুস্তির আয়োজন করা হয়। এবার কুমিল্লার হোমনা, মেঘনা, তিতাস, দাউদকান্দি, মুরাদনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, কালাপাহাড়িয়া, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, আড়াইহাজার, রাজশাহীর পবা উপজেলা থেকেও কুস্তি খেলোয়াড়েরা খেলায় অংশ নিয়েছেন।

চট্টগ্রামের আবদুল জব্বার স্মৃতি বলীখেলায় দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়া হোমনা উপজেলার বাঘা শরীফ, ডিপজল, নয়ন, টাওয়ার শরীফ, দাউদকান্দির হাসনাবাদের টারজান দিপু, মেঘনার লায়ন সাত্তার, সোনারগাঁয়ের সরকার শরীফ, বাঞ্ছারামপুরের ওমর বাহার, সিংহ শাহীন, রাজশাহীর পবার ফয়সালসহ মোট ১৫০ জন খেলোয়াড় অংশ নেন।

খেলায় অংশ নেওয়া সবাইকে উপহার দেওয়া হয়েছে। তবে হোমনা উপজেলার মনিপুর গ্রামের বাঘা শরীফকে কৌশলগত ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় চ্যাম্পিয়ন ও মেঘনা উপজেলার লায়ন সাত্তারকে রানার-আপ ঘোষণা করা হয়। বাঘা শরীফকে একটি গরু ও লায়ন সাত্তারকে একটি খাসি উপহার দেওয়া হয়।

খেলা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিলখী ইউনিয়নের সাবেক কুস্তিবীর মোহাম্মদ আলী। সঞ্চালনা করেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনির হোসেন।

কুস্তি খেলায় প্রতিযোগীরা নিজেদের শক্তি, কৌশল ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগান
ছবি: প্রথম আলো

খেলার আয়োজক ও সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে হৃদ্যতা বাড়াতে ও এলাকার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই টানা ৫০ বছর ধরে এই কুস্তি খেলার আয়োজন করেন তাঁরা। কুস্তি খেলা মূলত হাডুডু বা বলীখেলা নামে পরিচিত। দাদা-বাবাদের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই খেলা আজও টিকে আছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, খেলাটি এলাকার ঐতিহ্য হয়ে গেছে। এক রাতেই সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেলার আয়োজন করা হয়। মাঠের তিন পাশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। এক পাশে অতিথিদের বসার জন্য বিরাট মঞ্চ তৈরি করা হয়। বাঁশের চারপাশে পুরুষ দর্শক, মাঠের আশপাশের বসতবাড়িগুলোর উঁচু স্থানে নারী দর্শক এবং মাঠের দুই পাশে বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা অংশে খেলোয়াড়দের জন্য মাটিতে বসার ব্যবস্থা করা হয়।