দেশকে অস্থির করতে কিছু লোক পেছন থেকে কাজ করছে: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁওয়ে আলেম–ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরে বেসরকারি সংস্থা মানবকল্যাণ পরিষদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রেছবি: প্রথম আলো

দেশে একটা ক্রান্তিকাল চলছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এখন দেশে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা উঠছে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আন্দোলন হচ্ছে। কেন জানি মনে হয়, দেশকে অস্থির করে তোলার জন্য কিছুসংখ্যক লোক পেছন থেকে কাজ করছে। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সাবধান থাকতে হবে।’

আজ রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরে বেসরকারি সংস্থা মানবকল্যাণ পরিষদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে স্থানীয় আলেম–ওলামাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা যেন আবার অন্ধকারের দিকে চলে না যাই। আমরা যেন নিজেদের মধ্যে বিভেদ–অনৈক্য সৃষ্টি করে চক্রান্তকারীদের হাতে না পড়ি। এমনটা হলে দেশ আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনকে ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে, বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা যেন করতে না পারে, আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

‘কোরআন–সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন করতে দেব না’

আলেম–ওলামাদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অনেকে এটা ছড়িয়েছে, আমরা নাকি কোরআন ও সুন্নাহর আইন চাই না। নাউজুবিল্লাহ। আমরা সব সময় কোরআন ও সুন্নাহর মধ্যেই থাকতে চাই। আমরা কমিটেড, অঙ্গীকারবদ্ধ। এই দেশে আমরা কোরআন ও সুন্নাহর বাইরে কোনো আইন করতে দেব না। এটা আমাদের কমিটমেন্ট। এই কমিটমেন্ট আমরা সব সময় করে এসেছি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই নির্বাচনে আপনারা নির্ধারণ করবেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই দেশ কারা পরিচালনা করবে। তাই এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত ১৫ বছর দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে তারা (আওয়ামী লীগ) ধ্বংস করে দিয়েছিল। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। শুধু কিছুসংখ্যক ব্যক্তিকে ধনী করার জন্য তারা ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে। সামগ্রিকভাবে গোটা দেশের মানুষকে তারা বঞ্চিত করেছে।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতা পেয়ে চিরস্থায়ী করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্যাতন–নিপীড়ন করেছে। আলেম–ওলামাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে। এমনকি তাঁদের ফাঁসি দিয়ে শহীদ করা হয়েছে। সেই সময় আপনারা কেউ নিরাপদে ছিলেন না। রাস্তাঘাটে আপনারা ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেননি। আপনারা সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতেন, কখন আপনাদের জঙ্গি বলে ধরে নিয়ে যায়।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্কে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা একটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আমাদের ধর্মবোধ, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি রক্ষা করার জন্য আমরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। আমরা শান্তি চাই। আমরা চাই, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।’

সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলীসহ জেলার আলেম–ওলামা, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও বিএনপির স্থানীয় নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।