গাইবান্ধায় পুলিশের কাছ থেকে আটক বিএনপির নেতাদের ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জে পুলিশের কাছ থেকে আটক বিএনপির নেতাদের ছিনিয়ে নেন তাঁদের স্বজন ও কর্মীরা। রোববার দুপুরে মহিমাগঞ্জ চিনিকলের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে পুলিশকে মারধর করে আটক বিএনপির তিন নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার দুপুরে মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকল কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বিএনপির হরতালের মধ্যে সকাল থেকে মহিমাগঞ্জ বাজারে দোকানপাট খোলা ছিল। অটোরিকশা-ভ্যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। দুপুর ১২টা থেকে রংপুর চিনিকলের সামনে পিকেটিং করছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে বেলা একটার দিকে গোবিন্দগঞ্জ থানা-পুলিশ সেখানে গিয়ে পিকেটিংয়ে বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় পুলিশ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিনজনকে আটক করে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পুলিশ আটক তিনজনকে নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় বিএনপির কর্মী ও আটক নেতাদের স্বজনেরা রাস্তায় বসে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। তাঁরা বিএনপির নেতা সুফিয়ানের মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দেন। একপর্যায়ে উপস্থিত লোকজন পুলিশকে মারধর করে ভ্যান থেকে আটক ব্যক্তিদের ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হলে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও ছিনিয়ে নেওয়া নেতাদের আর আটক করতে পারেনি।

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম বলেন, ছিনিয়ে নেওয়া নেতাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে ঘটনার পর মহিমাগঞ্জ এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। ঘটনায় জড়িত বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তারের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। মহিমাগঞ্জ বাজার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও বন্ধ পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা বিএনপির এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল। আটক নেতারা হরতাল পর্যবেক্ষণ করছিলেন। সবাইকে হরতাল পালন করার আহ্বান জানাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে তাঁদের আটক করলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়।

এদিকে বিএনপির হরতাল ঘিরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন নবীসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ১৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীও আছেন।