ময়মনসিংহ থেকেই আন্তনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন চলার দাবি

বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ময়মনসিংহ থেকেই চলার দাবিতে জনশুনানি। আজ বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের কৃষ্ণচূড়া চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

আন্তনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি ময়মনসিংহ থেকেই চলাচল করার দাবি জানিয়েছে ময়মনসিংহের নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ। ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের কৃষ্ণচূড়া চত্বরে আজ বুধবার বিকেলে এ বিষয়ে জনশুনানির আয়োজন করে জনউদ্যোগ।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তনগর বিজয় এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ৯ বছর পর ট্রেনটি ময়মনসিংহের বদলে জামালপুর থেকে যাত্রা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনটি যাত্রাবিরতি দেবে। তবে বিজয় এক্সপ্রেসের যাত্রা শুরুর স্টেশন ময়মনসিংহের বদলে জামালপুর নিয়ে যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ ময়মনসিংহের সচেতন নাগরিক সমাজ। এ দাবিতে এক মাস ধরে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন একাধিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ।

বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত জনশুনানিতে জনউদ্যোগের আহ্বায়ক আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রয়াত অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের অনুরোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি দেয়। ট্রেনটি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ময়মনসিংহ মুক্ত দিবসের স্মারক উপহার হিসেবে ময়মনসিংহবাসীকে দেওয়া হয়। যে কারণে ট্রেনটির প্রতি মানুষের আবেগ কাজ করে।

ট্রেনটি ময়মনসিংহের বদলে জামালপুর থেকে চলাচল করলে ময়মনসিংহের মানুষ ট্রেনে চড়ার ভোগান্তিতে পড়বেন। পাশাপাশি আসন কমে যাবে এবং মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বেন।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানা গেছে, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনে মোট আসনসংখ্যা ৭১৫। এর মধ্যে ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামের আসন রয়েছে ২৯৪টি। জামালপুর থেকে চলাচল শুরু হলে ময়মনসিংহ থেকে আসন ১০০টি কমে যাবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহে আসার সময় কমে যাবে ১০৭টি আসন। কমে যাওয়া ছাড়াও মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ময়মনসিংহে আসার পথে চট্টগ্রামের পর যেকোনো স্টেশন থেকে ময়মনসিংহের আর কোনো টিকিট রাখা হয়নি। কেউ ময়মনসিংহ বা ময়মনসিংহ জেলার অন্য কোনো স্টেশনের যাত্রী হলে তাঁকে জামালপুরের টিকিট করে ময়মনসিংহে নামতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের মাধ্যমে রেল কর্তৃপক্ষ সরকারকে বোঝাতে চাইছে জামালপুর থেকে চললে আর্থিকভাবে ক্ষতি হবে না।

ময়মনসিংহের নাগরিক নেতারা বলেন, বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি রেলওয়ের একজন শীর্ষ কর্তার ইচ্ছায় জামালপুর নেওয়া হয়েছে। এতে এক রাজনৈতিক নেতার প্রভাব রয়েছে।
১ নভেম্বর থেকে ট্রেনটি জামালপুর থেকে চলার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বিষয়টি জানতে পেরে ময়মনসিংহের নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ করতে শুরু করে। পরে ১ নভেম্বর থেকে চলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। এর মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা ও ময়মনসিংহ সদর আসনের সংসদ সদস্য রওশন এরশাদ ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক রেলমন্ত্রীকে চিঠি দেন। এ ছাড়া ময়মনসিংহ নাগরিক আন্দোলন ও উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ একাধিকবার মানববন্ধন, প্রতিবাদী সমাবেশ ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করে। এরপরও আগামী ১ ডিসেম্বর জামালপুর থেকে ট্রেনটি চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।