নোয়াখালীতে বিএনপির মিছিলে হামলা–গুলি, আহত ২০

হরতালের সমর্থনে বের করা বিএনপির মিছিলে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। আজ দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার আজিজপুর পোলের গোড়া এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় হরতালের সমর্থনে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে হামলা ও গুলি বর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের আজিজপুর পোলের গোড়া নামক স্থানে ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কমপক্ষে ২০ জন ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পাঁচজনকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানের অনুসারীরা আজিজপুর পোলের গোড়া এলাকায় ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মহাসড়কের প্রায় ১০০ গজ অতিক্রমের পরই কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এসে অতর্কিতে মিছিলে হামলা চালায় একদল লোক। তারা মিছিলকারীদের দিকে গুলি ছুড়তে থাকে। এতে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় ছররা গুলিতে মিছিলকারীদের বেশ কয়েকজন আহত হন। ঘটনার বেশ কিছু সময় পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তখন মিছিলকারীদের কেউ সেখানে ছিলেন না।

হরতালের সমর্থনে বের করা বিএনপির মিছিলে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। আজ দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার আজিজপুর পোলের গোড়া এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

হরতালের মিছিলে নেতৃত্বদানকারী সেনবাগ পৌরসভা বিএনপির সদস্য মফিজুল ইসলাম ওরফে ভিপি মফিজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা হরতালের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলেন। মিছিলটি মহাসড়কে ওঠার পর কিছু পথ অতিক্রম করতেই পূর্ব দিক থেকে (সেনবাগ রাস্তার মাথা এলাকা) কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলযোগে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একদল কর্মী অতর্কিত মিছিলে হামলা চালায়। হামলাকারীরা এ সময় মিছিল লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জন ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। ছররা গুলিতে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব আনোয়ার হোসাইনও রয়েছেন।

হরতালের সমর্থনে বের করা বিএনপির মিছিলে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। আজ দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার আজিজপুর পোলের গোড়া এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নেতা মফিজুল ইসলাম জানান, হামলার ঘটনার পর আহত নেতা-কর্মীরা আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে তাঁদের স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল, ওষুধের দোকান এবং বাড়িতে রেখে রেখে পল্লিচিকিৎসক ডেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কয়েকজনের শরীর থেকে ছররা গুলি বের করা হয়েছে। বাকিদের অনেকের শরীর থেকে এখনো গুলি বের করা সম্ভব হয়নি। পুলিশি হয়রানি এড়াতে বাসাবাড়িতে রেখে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাবিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম ওরফে ভিপি মোহন প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির মিছিলে কোনো ধরনের হামলা কিংবা গুলির কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই। তা ছাড়া যেখানে হামলা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, ওই স্থান তাঁর থেকে অনেক দূরে।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মিছিলে গন্ডগোলের খবর শুনেছেন ঘটনার অনেক পরে। পুলিশ গিয়ে কাউকে পায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বিএনপির জয়নুল আবেদিন ফারুকের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে নাকি হামলা হয়েছে। তবে সেখানে গুলির ঘটনা ঘটেছে কি না, সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন। আহত কাউকেও পাওয়া যায়নি। এলাকায় পুলিশের টহল রয়েছে।