কুষ্টিয়ায় পূর্বশত্রুতার জেরে হামলায় আহত ৪, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছেছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় চারজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গোবরা চাঁদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন গোবরা চাঁদপুর গ্রামের মন্টু শেখ (৩৭), ঝন্টু শেখ (৩০), আক্কাস আলী (২৭) ও ওয়াদুত শেখ (৪৫)। তাঁদের মধ্যে তিনজন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মন্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ছয় থেকে সাত মাস আগে গ্রামের কিশোর ও তরুণদের ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান রাশিদুজ্জামানের সমর্থকদের সঙ্গে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের বিরোধ চলছিল।

সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে রাশিদুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফের (ট্রাক প্রতীকে) সমর্থনে নির্বাচন করেছিলেন। আর সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব উদ্দিন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিম আলতাফের (নৌকা প্রতীকে) পক্ষে নির্বাচন করেছিলেন। ভোটে সেলিম আলতাফকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রউফ বিজয়ী হন। এর পর থেকে রাশিদুজ্জামানের লোকজন প্রতিশোধ নিতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাশিদুজ্জামানের সমর্থকেরা গতকাল সন্ধ্যায় সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে চারজন আহত হন। ঘটনার পর থেকে গোবরা চাঁদপুর গ্রামের মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।

সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব উদ্দিন বলেন, বছরখানেক আগে ক্রিকেট খেলা নিয়ে ছোটদের মারামারি হয়েছিল। পরে বসে তা মীমাংসা করা হয়েছিল। এরপর ভোটে জেতার পর থেকে বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা কয়েকবার নৌকার কর্মীদের ওপর হামলা করেছেন। গতকালও প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। এতে তাঁর চারজন কর্মী আহত হয়েছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রাশিদুজ্জামান বলেন, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জেরেই মারামারি হয়েছে। তিনি খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে থামানোর চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে ভোট বা রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার তদন্ত চলছে। রাজনৈতিক কোনো ব্যাপার আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।