বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহানের পদ স্থগিত

বিলকিস আক্তার জাহানছবি: প্রথম আলো

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহানের (শিরিন) পদ স্থগিত করা হয়েছে। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তিনি বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। আজ রোববার বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাঁর দলীয় পদ স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়। তবে চিঠিতে পদ স্থগিতের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সদ্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আজ এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি। এতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাঁর সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কী কারণে এটা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানি না।’

রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) বিলকিস জাহান শিরিনের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) হিসেবে বিলকিস জাহান শিরিনের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিলকিস জাহানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নগরের ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকায় বিরোধ রয়েছে, এমন একটি পুকুর ভরাট করার পাঁয়তারা চালানোর অভিযোগ ওঠে। সরকার পরিবর্তনের পর টানা চার রাত ট্রাক দিয়ে বালু এনে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগে পুকুর দখল করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকার বাসিন্দারা। তবে বিলকিস জাহান সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিএনপি সরকারের আমলে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন বিলকিস জাহান। অভিযোগের বিষয়ে রোববার বিকেলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুকুরটি আমার বাপ–দাদার সম্পত্তি, এটা ঠিক। তবে ওখানে আমার কোনো জমি নেই। আমি ওখানে ভরাট করতে যাব কী কারণে? ওখানে আমার বংশের লোকেরা জমি পাবে, এটা ঠিক। আর পুকুরটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য দান করার বিষয়টি সত্য নয়। পুকুর ভরাটে আমি বা আমার পরিবারের কেউ জড়িত নই। ওই পুকুরসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার জমির মালিক প্রায় ৩০ জন। তাদের কেউ হয়তো সেটি ভরাট করেছে। আমাকে বিতর্কিত করার জন্য কেউ এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

দলীয় সূত্র জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে টানা আড়াই মাসের আন্দোলনে দল থেকে দেওয়া অর্থ তছরুপ, বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি করার ক্ষেত্রে অর্থ লেনদেনসহ নানা অভিযোগ আছে বিলকিস জাহানের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে সম্প্রতি মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় নিজের লোকদের পদ দেওয়া ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও আছে।

অভিযোগের বিষয়ে বিলকিস জাহান বলেন, ‘এত নোংরা এবং কাল্পনিক অভিযোগ করে আমাকে বিতর্কিত করা হয়েছে। এসবের বিন্দুবিসর্গ সত্যতা নেই। প্রতিহিংসাবশত এসব কাল্পনিক অভিযোগ তুলে আমাকে জব্দ করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে।’ দলীয় পদ স্থগিতের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো জানি না, হঠাৎ করে কেন আমার বিরুদ্ধে এটা করা হলো।’