উপাচার্য আবদুস সালাম ‘ছুটিতে’ থাকায় আটকে আছে সিদ্ধান্ত

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত কমিটি। এ ছাড়া হল প্রাধ্যক্ষের গঠিত কমিটিও অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর হল সংযুক্তি বাতিলের সুপারিশ করেছে। এই দুই কমিটির করা বিভিন্ন সুপারিশ এখন ঝুলে আছে উপাচার্যের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অস্থিরতার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাস ছাড়েন উপাচার্য শেখ আবদুস সালাম। আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত তিনি ছুটিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, উপাচার্য বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। ৪ মার্চ তাঁর ক্যাম্পাসে আসার কথা রয়েছে। ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং হল প্রশাসনের পাঠানো পাঁচ শিক্ষার্থীর হল সংযুক্তির বাতিলের সুপারিশের রেজুলেশন হাতে পেয়েছেন। এই দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র উপাচার্যের।

এইচ এম আলী হাসান আরও বলেন, যেহেতু উপাচার্য ছুটিতে আছেন এ জন্য এই দুই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। তিনি আসার পর নিজেই এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

আরও পড়ুন

এ দিকে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল প্রাধ্যক্ষের গঠিত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের পাঁচ নেতা-কর্মীর আবাসিক সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। এই পাঁচজনের হল সংযুক্তি বাতিলের সুপারিশও করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত কমিটিও নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছে। তবে এই কমিটি সাজার ব্যাপারে কোনো সুপারিশ করেনি।

আবাসিক সুবিধা বাতিল হওয়া ওই পাঁচ ছাত্রী হলেন ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সানজিদা চৌধুরী, ছাত্রলীগের কর্মী চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের হালিমা আক্তার, আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মুয়াবিয়া জাহান।

আরও পড়ুন

১২ ফেব্রুয়ারি হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে ফুলপরীকে নির্যাতন করেন ছাত্রলীগের এই নেতা-কর্মীরা। এরপর হল প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর, ছাত্র-উপদেষ্টা ও নিজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে অভিযোগ করেন ফুলপরী। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুটি তদন্ত কমিটি করে। এ ছাড়া গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসক আরেকটি কমিটি করেন। একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি করে ছাত্রলীগও।

এসব কমিটির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা কমিটি গত রোববার সকাল ১০টায় প্রতিবেদন জমা দেয়। একই দিন সন্ধ্যায় প্রাধ্যক্ষের গঠিত কমিটি প্রতিবেদন দেয়। আর ছাত্রলীগের করা তদন্ত কমিটি রোববার রাতে তাদের প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠায়।

আরও পড়ুন