লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজারে
ছবি: সংগৃহীত

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানায় ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পরে নেতা-কর্মীরা লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সড়ক বেলা দেড়টা পর্যন্ত অবরোধ করে রাখেন।

শনিবার দুপুরে দিকে চন্দ্রগঞ্জ নিউমার্কেটের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে নেতা-কর্মীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

এই হামলার ঘটনার জন্য চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদকে দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছাবির আহমেদ, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সোলায়মান, চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক সাহাব উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।  

এর আগে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অতর্কিত হামলায় ছাত্রলীগের কর্মী এম সজীবসহ চারজন আহত হয়েছেন। এ সময় সজীব ছররা গুলিবিদ্ধ হন আর অন্যদের কুপিয়ে আহত করা হয়। গতকাল শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া এলাকার যদির পুকুরপাড়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সজীব চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী। অন্যরা হলেন ছাত্রলীগের কর্মী সাইফুল পাটওয়ারী, সাইফুল ইসলাম জয় ও মো. রাফি।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় কয়েকজন যদির পুকুরপাড় এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা ও ফাঁকা গুলি চালানো হয়। আহত সজীব, সাইফুল ও রাফির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন চিকিৎসক। আহত জয়কে সদর হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বলেন, রমজানের শুরু থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মামুনুর রশিদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে তাঁর লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

মাসুদুর রহমান আরও বলেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মামুনুর রশিদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। মামুনুর রশিদ স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ বহন করলেও তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান। এ নিয়েই মামুনুর রশিদের সঙ্গে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছাবির আহম্মেদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বলেছেন, ‘হামলা ও গুলির ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো লোকজন জড়িত ছিলেন না। ঘটনার পর আমি শুনেছি।’

চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজ উদ্দিন বলেন, হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।