রাতে বাবার লাশের পাশে, সকালে পরীক্ষার হলে

মোতাহের হোসেন খান
ছবি: সংগৃহীত

সারা রাত বাবার লাশের পাশে বসেছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহিদুল হোসাইন খান ওরফে মিরাজ। বৃহস্পতিবার সকালে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে যায় সে। পরীক্ষা শেষে বাড়ি এসে জানাজায় অংশ নেয় মাহিদুল।

মাহিদুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রামের বাসিন্দা মৃত মোতাহের হোসেন খানের (৫৩) ছেলে। ভাইবোনের মধ্যে মাহিদুল বড়। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার মাহিদুল গণিত পরীক্ষায় অংশ নেয়।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোতাহের হোসেন আখাউড়া পৌর এলাকার রাধানগরের গ্রিন ভ্যালি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবসায়ী ছিলেন। গত বুধবার দুপুরে তিনি অসুস্থবোধ করেন। সন্ধ্যায় দেবগ্রামের নিজ বাড়িতেই তিনি মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার বাড়িতে বাবার লাশ রেখেই ছেলেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। পরে বিকেলে আসরের নামাজের পর দেবগ্রাম পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে লাশের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দেবগ্রামের কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

মাহিদুলের সহপাঠী মো. রুবেল বলেন, পরীক্ষার হলে বসেও মিরাজ কান্না করছিল। কক্ষ পরিদর্শক ও সহপাঠীরা তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। পরীক্ষা চলাকালে মাহিদুলের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সবাইকে আপ্লুত করেছে।

মাহিদুল হোসাইন খান
ছবি: সংগৃহীত

সদ্য বাবা হারানো ছেলে মাহিদুল হোসাইন খান বলে, ‍বুধবার সকালে মুঠোফোনে তার বাবার সঙ্গে শেষ কথা হয়। এরপর সন্ধ্যায় তার বাবার মৃত্যু হয়।

মোতাহের হোসেনের বন্ধু উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবদুল মমিন প্রথম আলোকে বলেন, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে বাবার মৃত্যুতে ছেলেটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সারা রাত সে বাবার লাশের পাশে বসে ছিল, সকাল বাবার লাশের কফিন ছুঁয়েই পরীক্ষা দিতে গেছে মাহিদুল। তার পরীক্ষার জন্যই জানাজা বিকেলে হয়েছে।