জাফলংয়ে আটকে রাখা লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাটের গুচ্ছগ্রাম থেকে বানরটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের জাফলংয়ে প্রায় এক সপ্তাহ আগে একটি লজ্জাবতী বানর আটক করেছিলেন সাত্তার মিয়া নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। পরে বানরটিকে খাঁচায় বন্দী করে রাখেন তিনি। প্রথমে সিলেট বন বিভাগের পক্ষ থেকে সাত্তার মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বানরটি ফিরিয়ে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। অবশেষে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের সাত্তার মিয়ার কাছ থেকে বানরটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ।

বন বিভাগ জানিয়েছে, লজ্জাবতী বানর খুবই নিরীহ ও লাজুক প্রজাতির প্রাণী। সাধারণত নরম ফল খেয়ে থাকে এ বানরটি। প্রায় এক সপ্তাহ আগে গুচ্ছগ্রামের সাত্তার মিয়া বাড়ির নারকেলগাছ থেকে বানরটিকে আটক করেন। পরে তিনি খাঁচায় রেখে বানরটি পালন করে আসছিলেন। লজ্জাবতী বানর আটকের খবর পেয়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সাত্তার মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সেটি হস্তান্তরে সাড়া দিচ্ছিলেন না। পরে বন বিভাগের জাফলং বনবিট কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডলের নেতৃত্বে বন বিভাগের একটি দল সাত্তার মিয়ার বাড়িতে গিয়ে বানরটি উদ্ধার করে।

সিলেট সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদ উদ্দিন বলেন, বানরটি প্রথমে দিতে না চাইলেও বুঝিয়ে বলার পর সাত্তার মিয়া সেটি বন বিভাগকে হস্তান্তর করেন। পরে বানরটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বানরটিকে খাবার দিয়ে বন বিভাগে উন্মুক্ত স্থানে রাখা হয়েছে। এটি সুস্থ রয়েছে। পরে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এটিকে অবমুক্ত করা হবে।

সাদ উদ্দিন বলেন, লজ্জাবতী বানর সিলেটে এখন খুব একটা দেখা যায় না। তবে খাদিম উদ্যানে কয়েকটি লজ্জাবতী বানর রয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকায় লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী, লজ্জাবতী বানর ‘সংরক্ষিত প্রাণী’।

মূলত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনের বাসিন্দা লজ্জাবতী বানর। প্রাণীটি নিশাচর এবং বনের গভীরে উঁচু গাছে থাকতে পছন্দ করে। দিনে গাছের খোঁড়লে বা ঘন পাতার আড়ালে ঘুমিয়ে কাটায়। বিরল, নিশাচর ও লাজুক হওয়ায় দিনের বেলা প্রণীটি সহজে চোখে পড়ে না। এগুলো গাছে গাছেই থাকে এবং সহজে মাটিতে নামে না। অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাফেরা করে। এগুলো সাধারণত ফল, পাতা, উদ্ভিদের কষ ইত্যাদি খেয়ে থাকে।