ঠাকুরগাঁওয়ে মনোনয়ন–দৌড়ে সংসদ সদস্য, তাঁর ছেলে, ভাই ও ভাতিজা

দবিরুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

দবিরুল ইসলাম-মাজহারুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী-আলী আসলাম সম্পর্কে বাবা–ছেলে। তাঁরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁরা চারজন ঠাকুরগাঁও-২ আসনে প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলার একাংশ নিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ আসন। এ আসনে ১৯৮৬ সাল থেকে টানা সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন দবিরুল ইসলাম। প্রথমবার তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে ১৫–দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। এরপর ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জয়ী হন। এবারের নির্বাচনেও দবিরুল ইসলাম আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন। গত রোববার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ব্যক্তিগত সহকারী মো. কামরুজ্জামান।

মাজহারুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

এবারের নির্বাচনে একই আসনে দবিরুল ইসলাম ছাড়াও দলের মনোনয়ন চেয়েছেন তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলাম। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পাশাপাশি একটি মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

দবিরুল ইসলামের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। এবার তিনিও এই আসন থেকে মনোনয়নপ্রাত্যাশী। মনোনয়ন চেয়ে দলীয় ফরম তুলেছেন তিনি।

মোহাম্মদ আলী
ছবি: সংগৃহীত

মোহাম্মদ আলীর ছেলে আলী আসলামও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। আলী আসলাম বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা  যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি তাঁর চাচা (দবিরুল ইসলামের ছোট ভাই) সফিকুল ইসলামকে পরাজিত করে জয়ী হন।

এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রলীগের প্রথম সভাপতি দবিরুল ইসলামের দুই ছেলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহসান হাবিব ও আহসান উল্লাহ। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন আহসান হাবিব।

আলী আসলাম
ছবি: সংগৃহীত

এ ছাড়া মনোনয়ন–দৌড়ে আরও রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীর কুমার রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলম, মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর নস্কর, ইসলামী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, হরিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল হাসান ও হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম শামীম ফেরদৌস।

এ সম্পর্কে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ আসনে তাঁর বাবা দীর্ঘদিন ধরে সংসদ সদস্য। জনপ্রিয়তার কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে বারবার মনোনয়ন দেন। বাবার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই তিনি দলের মনোনয়ন চেয়েছেন।

এ বিষয়ে দবিরুল ইসলামের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। নির্বাচনের মাঠ গোছানোর কৌশল আমার ভালো জানা আছে। বড় ভাইয়ের জয়ে আমারও বড় হাত রয়েছে। তাই এবার আমি দলের প্রার্থী হতে চাচ্ছি। মনোনয়ন পেলে অবশ্যই জয়ী হব।’

একই পরিবারের চারজনের মনোনয়ন প্রত্যাশার বিষয়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি কখনোই এমপি সাহেবের (দবিরুল ইসলাম) পরিবারের সদস্য নই। তিনি আমার বংশের, কিন্তু পরিবারের না। আমরা চারজনই আলাদা আলাদা পরিবারের সদস্য।’
সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম বলেন, দলের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। এ প্রতিযোগিতা থেকেই তাঁর ছেলে, ছোট ভাই ও ভাতিজা মনোনয়ন চাইছেন বলে মনে করেন তিনি।