জীবনের আসল সাফল্য শুধু ভালো ফলে নয়; বরং ভালো মানুষ হয়ে ওঠার মধ্যে নিহিত। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হতে হবে, বড় স্বপ্ন দেখতে হবে এবং সমাজের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। অধ্যবসায় ও সততার সঙ্গে এগোলে জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রেই জয়ী হওয়া সম্ভব।
গোপালগঞ্জে জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ কথা বলেন অতিথিরা। ‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগানে শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে প্রথম আলো। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নানা আয়োজনে মেতে ওঠে জেলার কৃতী শিক্ষার্থীরা।
সকাল থেকেই সংবর্ধনাস্থলে আসতে শুরু করে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কৃতী শিক্ষার্থীরা। কেউ ছিল গল্পগুজবে ব্যস্ত, কেউবা সেলফি তোলায়। সংবর্ধনার নিবন্ধনের আমন্ত্রণ কার্ড হাতে সারিবদ্ধভাবে নির্ধারিত বুথ থেকে শিক্ষার্থীরা ক্রেস্ট, স্ন্যাক্সসহ উপহারসামগ্রী সংগ্রহ করে। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নিবন্ধন করেছিল মোট ৩৮২ শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে আসেন অভিভাবকেরাও।
সকাল ঠিক ১০টায় মঞ্চে হাজির হন উপস্থাপক ও বন্ধুসভার বন্ধু আবির হেসেন (অনিক) ও শাহনাজ পারভীন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সবাই। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি নুতন শেখ।
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, ‘ক্ষণিকের সফলতাই সফলতা নয়। তোমাদের এই সাফল্য ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। জিপিএ-৫ পাওয়াই মূল লক্ষ্য নয়, মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করা, ভালো মানুষ হওয়া, সফল মানুষ হওয়াই বড় কাজ।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে গোপালগঞ্জের অনির্বাণ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আবু হোসেন বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়েছি কিন্তু বাংলাদেশের মতো সোনার দেশ আর কোথাও দেখিনি। তোমরা দেশকে ভালবাসবে, দেশের যেকোনো সংকটে তোমাদের এগিয়ে আসতে হবে।’
এরপর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান এগিয়ে চলে। বন্ধুসভার বন্ধু সম্রাট হাজরা ও তাঁর দলের গান এবং নৃত্য পরিবেশনা মুগ্ধতা ছড়ায়। কৃতী শিক্ষার্থীরাও সাংস্কৃতিক এসব আয়োজনে অংশ নিয়ে মাতিয়ে তোলে মিলনায়তন।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে প্রথম আলোর নানা ইতিবাচক উদ্যোগ তুলে ধরে বক্তব্য দেন প্রথম আলোর খুলনা প্রতিনিধি উত্তম মণ্ডল। এরপর উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মিথ্যা, মুখস্থবিদ্যা ও মাদকের বিরুদ্ধে শপথবাক্য পাঠ করান তিনি।
অনুষ্ঠানে শেষ দিকে রাখাল ঠাকুরের নেতৃত্বে ত্রিবেণী শিল্পগোষ্ঠী, শিশু একাডেমির শিক্ষক শিপ্রা বিশ্বাসের দল গান ও কবিতা আবৃত্তি করে। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে কুইজ বিজয়ী ১০ শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেন অতিথিরা। গোপালগঞ্জ বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক ফারদুল্লা লস্কর ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই কনকা-গ্রি এবং সহযোগিতায় ছিল কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।