বুধবার চট্টগ্রাম বন্দরমুখী সড়ক অবরোধ, জেলায় জেলায় বিক্ষোভ

শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের(স্কপ) বিভাগীয় সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবেছবি- জুয়েল শীল

চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুতে শ্রমিক–কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) আগামী বুধবার বন্দরমুখী সড়ক অবরোধ ও বিভাগের সব জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), লালদিয়ার চর ও পানগাঁও টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়। আজ শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত স্কপের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার। প্রেসক্লাবের জুলাই বিপ্লব হলে এ সম্মেলন আয়োজন করে শ্রমিক–কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) চট্টগ্রাম শাখা। এতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

স্কপের সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘দুটি টার্মিনাল দিয়ে দিলেন। কেউ জানে না। নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে মামলা হয়েছে। আদালত বলেছেন, শুনানি না হওয়া পর্যন্ত নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে চুক্তির কার্যক্রম বন্ধ রাখতে। কিন্তু এ আদেশ মানা হচ্ছে না। বন্দর নিয়ে স্কপ, বন্দর রক্ষা কমিটি, বাম দল—সবাই আন্দোলন করছে।’

অবরোধ প্রসঙ্গে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ‘বুধবার আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। আমরা বাধ্য করব বন্দর বিদেশিদের না দিতে। নগরের আগ্রাবাদ, বড়পোল ও মাইলের মাথা এলাকায় অবরোধ করা হবে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত অবরোধ চলবে। এ ছাড়া জেলাগুলোয় বিক্ষোভ মিছিল হবে।’

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকেরা তাঁদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে কর্মসূচি দিয়ে আসছেন। কিন্তু তাঁদের দাবি মানা হচ্ছে না। বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ করেছেন শ্রমিকেরা। এই প্রতিবাদ সবাইকে একসঙ্গে করতে হবে। অধিকার আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

সম্মেলনে স্কপের পক্ষ থেকে ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এসব দাবির মধ্যে আছে শ্রমিকদের সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমে পূর্ণ স্বাধীনতা, অভিন্ন শ্রম আইন ও অযৌক্তিক ছাঁটাই–হয়রানি বন্ধ, ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা ও মহার্ঘ ভাতা চালু, বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প আবার চালু ও আউটসোর্সিং বন্ধ। এ ছাড়া শ্রমিকদের রেশন, আবাসন, পেনশন, হাসপাতাল, নারীদের ডরমিটরি ও বেকার ভাতা নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়েছে।

সভায় অন্যদের মধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, স্কপের যুগ্ম সমন্বয়কারী আবদুল কাদের হাওলাদার, কেন্দ্রীয় নেতা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, সাইফুজ্জামান বাদশা, আহসান হাবিব, এ এ এম ফয়েজ হোসেন, মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।