শিক্ষার্থীর মাথা ফাটানোর ঘটনায় তিন ছাত্রলীগ নেতার পদ স্থগিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগে ছাত্রলীগের তিন নেতার পদ স্থগিত করেছে সংগঠনটি।

ওই তিন নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক ইমরুল হাসান, সহসম্পাদক আহমেদ গালিব ও সদস্য আহসানুল হাবীব।

আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের আলোচনা সভায় গিয়ে যাঁরা মারামারি করতে পারেন, তাঁদের সংগঠনে কোনো স্থান নেই। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তাঁরা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তাই তাঁদের পদ স্থগিত করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় উপাচার্য নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ছাত্রলীগের চার নেতা ও এক কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

ইমরুল হাসান ও আহমেদ গালিব ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া অপর তিনজন হলেন দর্শন বিভাগের কাইয়ুম হাসান ও আরিফুল ইসলাম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভিরুল ইসলাম। তাঁরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকেন।

তাঁদের মধ্যে কাইয়ুম হাসান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক, আরিফুল ইসলাম সদস্য ও তানভিরুল ইসলাম কর্মী। সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবেন না বলেও শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে সাইফুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পেটান মীর মশাররফ হোসেন হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা–কর্মী। এতে তাঁর মাথা ফেটে যায়। পরে তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

এদিকে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাঁদের থামাতে গেলে দুর্ব্যবহার করেন ছাত্রলীগ নেতারা। একপর্যায়ে ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান তাঁরা। ঘটনা দুটি তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, সাম্প্রতিক দুটি ঘটনা বিবেচনায় চিহ্নিত পাঁচজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এসব ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।