নেত্রকোনায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪

প্রতিপক্ষের হামলায় আহত নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি বেপারী
ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর সময় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এ সময় এক পক্ষের হামলায় অপর পক্ষের অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলাইমান হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি বেপারী, দপ্তর সম্পাদক সালমান হাসান ও সদস্য রুহুল আমিন। তাঁরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সাবেক সংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেনের (বীর প্রতীক) সমর্থক।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ হোসেনের অনুসারী। অপর পক্ষে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ারেসাত হোসেনের অনুসারী। জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে উভয় পক্ষ পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছে। আগেও একাধিকবার হামলা-মামলার মতো ঘটনায় জড়িয়েছে দুটি পক্ষ। অবশ্য ওয়ারেসাত হোসেন বছরখানেক ধরে অসুস্থ থাকায় এলাকায় আসেন না। নির্বাচনে আহমেদ হোসেন জয়লাভের পর থেকে তাঁর অনুসারীরাই একচ্ছত্রভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ওয়ারেসাতের অনুসারী ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে প্রায় ২৫ জনের মতো নেতা-কর্মী শহীদ বেদিতে ফুল দিতে যান। এ সময় আহমেদ হোসেনের অনুসারী উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাহিম খান, ছাত্রলীগ নেতা হাবুল মিয়া, পূর্বধলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি হৃদয় মিয়ার নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন রড, লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে প্রতিপক্ষের চারজন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রনি বেপারীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলায়মান হোসেন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে স্লোগান সহকারে নামার সময় উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই সাব্বির আহমেদসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।’

অভিযোগের বিষয়ে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা ব্যস্ত। উপজেলা পরিষদের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভের হামলার ঘটনায় আমরা জড়িত না। তাঁরা নিজেরা হয়তো এ ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।’

পূর্বধলা থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, পূর্বধলা সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি হৃদয় খান ও ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির আহমেদের নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এখনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।