ছেলে হারানোর কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁরা

২১ আগস্ট, ২০০৪: ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবিস্ফোরিত গ্রেনেড
ছবি: জিয়া ইসলাম

মেঝে পাকা টিনের ঘর। বারান্দায় ছেলের ছবির পাশে আনমনে বসে আছেন হারুন অর রশিদ (৮৪)। ঘরের ভেতর শুয়ে আছেন হাসিনা বেগম (৭০)। তাঁর চোখে ছলছল করছে পানি। প্রতিবছর আগস্ট এলেই ছেলে হারানোর বেদনায় এমন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠেন এই দম্পতি।

তাঁদের সন্তান মাহবুবুর রশিদ ২০০৪ সকালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত ব্যক্তিদের একজন। ২০০১ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছিলেন মাহবুবুর। কিছুদিন পরই যোগ দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসার ফুলবাড়িয়ায়।

গত শনিবার ফুলবাড়িয়া গ্রামে গিয়ে জানা গেল, গ্রামের বাড়িতে কেবল মাহবুবুরের মা–বাবা বাস করেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান ঢাকায় থাকেন। হাসিনা বেগমের শারীরিক অবস্থা এখন তেমন ভালো নয়। বললেন, ‘বুকের মধ্যে ধড়ফড় করে ওঠে। বয়সের ভারে এখন আর বুকভরে শ্বাস নিতে পারি না। আগস্ট মাস আসলেই কষ্ট ও জ্বালা বেড়ে যায়।’

হারুন-হাসিনা দম্পতির বড় ছেলে জন্মের দুই বছরের মধ্যে মারা যায়। সে জন্য মাহবুবুরই ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান। সেই ছেলের মৃত্যুতে বেঁচে থাকার অবলম্বন হারিয়েছেন তাঁরা।

হারুন অর রশিদের অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা। মাসে কয়েক হাজার টাকার ওষুধ লাগে। তিনি বলেন, ‘এত দিন হয়ে গেল, খুনিদের বিচার (শাস্তি) হলো না। মরার আগে খুনিদের শাস্তি দেখে যেতে চাই।’