নোয়াখালীতে চার লাখ টাকার চুক্তিতে অটোরিকশাচালক হাকিমকে হত্যা

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম তাঁর কার্যালয়ে আজ সোমবার ব্রিফিং করেন। দুপুরে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

পূর্বশত্রুতার জেরে ভাড়াটে খুনি দিয়ে নোয়াখালীর সদর উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আবদুল হাকিমকে (৩৫) গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুই আসামির আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে টাকার বিনিময়ে খুন করার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপার (এসপি) শহীদুল  ইসলাম তাঁর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীর সঙ্গে আবদুল হাকিমের পূর্বশক্রতা ছিল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান রয়েছে। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আবদুল হাকিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। যার অংশ হিসেবে অর্থের লোভ দেখিয়ে আবদুল হাকিমের ভাড়ায় চালানো অটোরিকশার মালিক মো. মহিমকে ব্যবহার করা হয়। এ জন্য মহিমের সঙ্গে চার লাখ টাকার চুক্তি করেন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তবে তদন্তের স্বার্থে তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার চর মটুয়া ইউনিয়নের সফিগঞ্জ বাজারসংলগ্ন একটি সয়াবিনের খেত থেকে আবদুল হাকিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের গলা কাটা, পা বাঁধা অবস্থায় বস্তাবন্দি ছিল। এ ঘটনায় ২ মার্চ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত হাকিমের স্ত্রী রুবিনা বেগম। মামলায় তিনি ১০ জনের নাম উল্লেখ করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ঘটনার পর পরই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করা হয়। তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তি, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা বিচার-বিশ্লেষণ করে অটোরিকশার মালিকসহ আটজনকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে সোহেল নামের একজন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে চার লাখ টাকার চুক্তিতে অটোরিকশাচালক আবদুল হাকিমকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামি মো. রিপুর বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডের পর লাশ গুমের কাজে ব্যবহৃত শাবল ও কোদাল উদ্ধার করা হয়।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার আটজন আসামির মধ্যে মো. সোহেল ও মো. রিপু ওরফে শাকিল গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া মোমেন নামের আরেকজন আসামি আজ সোমবার দুপুরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেছেন। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এ পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনের নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, সদর উপজলার পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মো. মহিম (২৭), পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের রেজিয়াগো বাড়ির মো. কামাল ওরফে কামাল ডাকাত (৩৮), হারুন মোল্লা বাড়ির আজাদ হোসেন (৩২), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের অজি উল্যাহ পাটোয়ারী বাড়ির মো. রিপু (২১), জাহিদ হাসান (২৮), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মাহফুজের বাপের বাড়ির মো. সোহেল ওরফে শাকিল (২৪), একই গ্রামের দোকানবাড়ির মমিন উল্যাহ (৩৭) ও পাটোয়ারীবাড়ির নূর আলম মিস্ত্রি (৫৫)।