মৌলভীবাজার-২: সদ্য যোগ দেওয়া ওসির প্রত্যাহার দাবি প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর

মৌলভীবাজার জেলার মানচিত্র

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানায় সদ্য যোগ দেওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের নেতা এ কে এম সফি আহমদ ওরফে সলমান এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এম শাহীন এই দাবিতে সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে চিঠি দিয়েছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী ওরফে নাদেল। তাঁর সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদের সুসম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে দুই প্রার্থী বলেন, এতে নির্বাচন প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম সফি আহমদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আর তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এম শাহীন এ আসনে দুবার সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি একসময় মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন।

৭ ডিসেম্বর বদলির আদেশ হওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম সফি আহমদ ১১ ডিসেম্বর সিইসির কাছে চিঠি দেন। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এম শাহীনের পক্ষ থেকে তাঁর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ১০ ডিসেম্বর সিইসির কাছে চিঠি দেন। এর মধ্যেই ১২ ডিসেম্বর মোহাম্মদ আলী মাহমুদ কুলাউড়া থানায় যোগদান করেন।

সফি আহমদ চিঠিতে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস ও নির্বাচন কমিশনের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। কুলাউড়া থানায় বদলি হয়ে আসা ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ সিলেটের কোতোয়ালি থানায় ছিলেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী সিলেটে বসবাস ও রাজনীতি করেন। এ কারণে সেখান থেকে বদলি হওয়া ওসির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এতে জনমনে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন

চিঠিতে আরও বলা হয়, আলী মাহমুদকে কুলাউড়ায় বদলি করায় শফিউল আলমের কর্মী-সমর্থকেরা আনন্দ–উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করছেন। সিলেট শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজেরা ইতিমধ্যে কুলাউড়া শহরে অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি উপেক্ষা করে শফিউল আলমের সমর্থকেরা সভা, সমাবেশ, মিছিল চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে আলী মাহমুদকে জরুরি ভিত্তিতে কুলাউড়া থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় চিঠিতে।

এদিকে এম এম শাহীনের চিঠিতে বলা হয়, কুলাউড়া থানায় বদলি হয়ে আসা ওসির সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী একজন প্রার্থীর সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই তিনি (ওসি) প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে ওই প্রার্থীর পক্ষাবলম্বন করতে পারেন। এতে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের অঙ্গীকার এ আসনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদের পরিবর্তে অন্য কোনো কর্মকর্তাকে কুলাউড়া থানায় বদলির দাবি জানানো হয় চিঠিতে।

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর অভিযোগ সম্পর্কে ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরীর বাসা সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা এলাকায়। আর তিনি ছিলেন কোতোয়ালি থানায়। অনেকে অনেক কিছু বলতে পারেন। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কোনো নেতার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁকে কুলাউড়ায় বদলি করেছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে তাঁর বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

আরও পড়ুন