অবিলম্বে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আজ শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।
একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাসাবাড়ি ও মেসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হয়রানি বন্ধসহ চার দফা দাবি তুলে ধরেন তাঁরা।
চার দফা দাবির মধ্যে আছে অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় সাধারণ মানুষকে কোনো ধরনের মামলা বা হয়রানি না করা, শিক্ষার্থীদের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে হয়রানি বন্ধ করা এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাস খোলার পর নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভ। এ সময় দাবি তুলে ধরেন আরেক সমন্বয়ক মাহমুদুল হাসান সজিব। ছাত্র আন্দোলনের নেতা সানজিদা জাহান (সেতু), ভূমিকা সরকার ও সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সুজয় শুভ বলেন, ‘আমরা বরাবরই শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলন করে আসছিলাম। আন্দোলন চলাকালে দেশব্যাপী নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অনেক ভাইবোন আহত ও নিহত হয়েছেন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কারও অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে চাইনি। নির্বাহী বিভাগ আমাদের কোটা সংস্কারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে যে সমাধান করেছেন, আমরা মনে করি তাতে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। তবে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের দাবির পাশাপাশি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে কিছু দাবি আছে। সেসব দাবি তুলে ধরতেই আমাদের আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।’
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই। তবে জাতীয়ভাবে পরবর্তী যে কর্মসূচি দেওয়া হবে, আমরা সেই কর্মসূচি পালন করব।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই। তবে আমরা চাই, অবিলম্বে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হোক।’
বেলা একটার সংবাদ সম্মেলন সাড়ে চারটায়
বেলা একটায় সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর নেতারা উপস্থিত না হওয়ায় গণমাধ্যমকর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। পরে বেলা তিনটার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের ফোন করে সংবাদ সম্মেলনের কথা জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের একটি সূত্র জানায়, আজ দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রক্টরের কক্ষে ডেকে বৈঠক হয়। বৈঠকে তাঁদের একটি পক্ষ আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিলেও তাঁরা চাপ উপেক্ষা করে সাধারণ ছাত্রদের ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবদুল কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে হয়রানি না হয়, সেই বিষয়ে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া যায়, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। হল খোলার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তাঁদের জানিয়েছি। এর বাইরে কিছু না।’