মনিরামপুরে এসআইকে মারধরের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ৩

হামলায় আহত মনিরামপুর থানার এসআই আবু বক্করছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুরে এক ব্যবসায়ীর দোকানে হামলার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এক উপপরিদর্শক (এসআই) হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার মনিরামপুর বাজারে একটি কাপড়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মনিরামপুর থানার এসআই আবু বক্কর আজ মঙ্গলবার সকালে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় তিনি চারজনের নাম উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই তিনজন হলেন— মোজাফফর হোসেন, শরিফ হোসেন ও শাহ আলম। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কামালপুর গ্রামে।

এসআই আবু বক্কর বলেন, স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধি দলবল নিয়ে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মনিরামপুর বাজারের নিউ শাড়ি প্যালেসের মালিক মোশাররফ হোসেনের কাপড়ের দোকানে হামলা ও লুটপাট করছেন বলে খবর পান। এরপর তিনি সেখানে গিয়ে একজন জনপ্রতিনিধিকে আটক করেন। তখন ওই জনপ্রতিনিধির সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁর ওপর হামলা করে জনপ্রতিনিধিকে ছাড়িয়ে নেন। এসআই আবু বক্কর বলেন, ‘ওদের লোকজন আমাকে কিলঘুষি মারে। আমার ডান হাত মুচড়ে দিয়েছে। তারা আমার পরনের গেঞ্জি ছিঁড়ে দিয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করতে পেরেছি। বাকিরা পালিয়েছে।’

বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খাসজমি নিয়ে মোজাফফরের সঙ্গে মোশাররফের বিরোধ চলছে। মোশারফের দুটি পাকা কাপড়ের দোকান এবং মোজাফফরের কাঠের তৈরি কাপড়ের দোকান ছিল। বছরখানেক আগে মোজাফফরের দোকান অন্যত্র সরিয়ে দিয়ে ওই জায়গার দখল নেন মোশাররফ। গতকাল সন্ধ্যায় মোজাফফর লোকজন নিয়ে ওই জায়গা পুনরায় দখলে নিতে যান।

গতকাল ঘটনার সময় বাজারে নিজের কাপড়ের দোকানে ছিলেন ব্যবসায়ী নেছার আলী। তিনি বলেন, মোশাররফ ফোন করায় কিছুক্ষণের মধ্যে সাদাপোশাকে সেখানে আসেন এসআই আবু বক্কর। এ সময় সেখানে জটলা শুরু হয়। এসআই আবু বক্কর থানায় ফোন করলে অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে পুলিশ আসে। তারা সেখানে উপস্থিত লোকজনকে লাঠি দিয়ে খুব মারধর করে। এরপর সেখান থেকে কয়েকজনকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরে জানতে পারেন এসআই আবু বক্করের হাতের আঙুল ফেটে গেছে।

এসআই আবু বক্কর বলেন, ‘কাপড়ের ব্যবসায়ী মোশাররফ তাকে ফোন করার পর বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্যারকে জানাই। ওসি স্যার আমাকে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। এরপর আমি ডিউটি অফিসারকে ফোন করে ফোর্স পাঠাতে বলি। এর মধ্যে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই। ফোর্স পৌঁছানোর আগে আমার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।’

মনিরামপুর থানার ওসি এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।