টঙ্গীতে বিএনপির ঘরোয়া সভা থেকে ৪০ নেতা-কর্মী আটক

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

ঢাকায় ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে গাজীপুরের টঙ্গীতে এক ঘরোয়া প্রস্তুতি সভা থেকে দল ও সহযোগী সংগঠনের ৪০ নেতা–কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীর কলেজগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির অন্য নেতা–কর্মীর মধ্যে।

বিএনপির কয়েকজন নেতা–কর্মীর সঙ্গে কথা বলে এবং স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে গাজীপুরের টঙ্গীর কলেজগেট এলাকায় নিজ বাড়িতে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করেন শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন সরকার। সেখানে বিকেল থেকেই উপস্থিত হন গাজীপুর মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ১৩৫ জন নেতা–কর্মী। সভা চলাকালে তাঁর বাড়ি ঘিরে অবস্থান নেয় টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন পুলিশ। বিকেল পাঁচটার দিকে সভা শেষ হতেই হঠাৎ বাড়িয়ে ঢুকে পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতা–কর্মীদের আটক করতে থাকেন।

সভার আয়োজক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি সালাউদ্দিন সরকারের দাবি, সভাস্থল থেকে পুলিশ তাঁদের ৪০ নেতা–কর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্য শেষে সভা মাত্র শেষ হলো। এর মধ্যেই হুড়মুড় করে পুলিশ বাড়িতে ঢুকে পড়ে। কোনো কথা না বলেই আমাদের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে থাকে। আমরা বারবার বলেছি এটা একটা ঘরোয়া সভা। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তা–ও কোনো কথা না শুনে নির্বিচার নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।’

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক–সংলগ্ন টঙ্গীর কলেজ এলাকায় সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ি। সভাটি হচ্ছিল তাঁর বাড়ির ভেতর একটি সভাকক্ষে। ওই সভাকক্ষটিতে এলোমেলো পড়ে আছে চেয়ার টেবিল। গ্রেপ্তারের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কিছু নেতা–কর্মী এখনো এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করছেন। এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের অনেকের মধ্যেই আতঙ্ক লক্ষ করা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়ার্ড পর্যায়ের এক বিএনপি নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ বাড়ির ভেতর একটা সভা করতে দিল না পুলিশ। এটা কেমন দেশে বাস করছি। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার বলতে কিচ্ছু নেই। এখনই এমন ঘটনা, সমাবেশের দিন তো বাড়ি থেকেই বের হওয়া যাবে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর মহানগর পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী কমিশনার মো. মেহেদী হাসান এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন। গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

পরে উপকমিশনার মো. মাহবুব উজ জামান প্রথম আলোকে বলেন, কোনো সভা করার জন্য মহানগর পুলিশের যে অনুমতি থাকা দরকার, তা তাদের ছিল না। বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকায় তাঁদের আটক করা হয়েছে। বাড়ির ভেতর কোনো সভার অনুমতি প্রয়োজন হয় কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনে ঘরোয়া সভা বলে কোনো কথা নেই। আইনশৃঙ্খলার কথা ভেবেই আটক করা হয়েছে।