আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে
আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইনের বিরুদ্ধে। সোমবার বেলা আড়াইটায় বোয়ালমারীর স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন এ এফ এম বদরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। তিনি পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মো. নুরুজ্জামান মিয়ার ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে এ এফ এম বদরুজ্জামান অভিযোগ করেন, বোয়ালমারী পৌর বাজারের কামারগ্রাম মৌজার হাল ৬৮৫৮ দাগের ১০ শতাংশ জমি ১৯৯৩ সাল থেকে ক্রয়সূত্রে মালিক তাঁর বাবা মো. নুরুজ্জামান মিয়া, যা প্রায় ৩০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ভুলক্রমে হাল রেকর্ডে জমিটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আদালতের। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তা অমান্য করে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে মার্কেটের জন্য স্থাপনা নির্মাণ করছেন ইউএনও।
এ এফ এম বদরুজ্জামান বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমরা আদালতের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার কাগজ ইউএনওর কাছে জমা দিতে গেলে ইউএনও অফিস থেকে জানানো হয়, “তিনি অফিসে নেই। আপনারা রোববার আসেন।” তারপরও আমরা ইউএনও কার্যালয়ে নিষেধাজ্ঞার কাগজ জমা দিয়ে আসি। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যা থেকে অসংখ্য শ্রমিক দিয়ে ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণকাজ করা হয়।’
বর্তমান মাঠ জরিপে ভুলক্রমে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিটি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করেন এ এফ এম বদরুজ্জামান। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ফরিদপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জেলা প্রশাসক, বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারকে বিবাদী করে মামলাও করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মানিক মজুমদার বলেন, ১০ নভেম্বর ফরিদপুরের ১ নম্বর জেলা জজ আদালতের বিচারক ইউএনওর প্রতি এক আদেশে বলেছেন, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধপূর্ণ জমিতে কোনো ইজারা দেবেন না, স্থাপনা নির্মাণ করবেন না। আদালতের এ আদেশ অমান্য করায় সোমবার ফরিদপুর জেলা প্রশাসক ও বোয়ালমারীর সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও মোশারেফ হোসাইন বলেন, আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা কিংবা নির্দেশনা তাঁরা পাননি। ওই জমি সরকারি খাসজমি। বিএস শুধু নয়, এসএ দাগও ছিল সরকারি। তাঁরা যে জায়গা নিয়ে মামলা করেছেন, কিন্তু দেখাচ্ছেন অন্য জায়গা। জমিটির দাবিদার নুরুজ্জামান মিয়া এবং তা কালীপদ সাহার কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে বলে তাঁরা দাবি করছেন। আসলে এ জায়গার মালিক কখনো কালীপদ সাহা ছিলেন না। বিএস ও এসএ রেকর্ডের আগে গোহাট হিসেবে সেটি জমিদারি সম্পত্তি ছিল।
রাতের আঁধারে ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘দিন-রাত, সকাল, সন্ধ্যা যখনই সুযোগ হয়, তখনই কাজ করা হচ্ছে। জমিতে আমরা যেকোনো সময় কাজ করতে পারি। শুধু রাতে কাজ করা হচ্ছে, এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই।’