উচ্চশিক্ষিত ও ব্যবসায়ী প্রার্থী এবার বেড়েছে 

এবার মেয়র পদে ৫, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে ১৩৬ ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ড থেকে ৩৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গতবারের খুলনাসহ অন্য পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। যেহেতু প্রথমে হয়েছিল খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন, তাই সেখান থেকেই অনিয়মের শুরু। পরের নির্বাচনগুলোতে একই ধরনের অনিয়ম হওয়ায় তা খুলনা মডেল হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছিল। ২০২৩ সালের এই নির্বাচনে সব দল অংশ নিচ্ছে না। এ কারণে উৎসব নেই।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব মন্তব্য করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নেতারা। এবারের নির্বাচনের প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৫, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ড থেকে ১৩৬ ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে ৩৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে এক প্রার্থীর তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া না যাওয়ায় ১৭৯ প্রার্থীর হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সুজন। 

শিক্ষাগত যোগ্যতা

১৭৯ প্রার্থীর মধ্যে ৭৮ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা (৪৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ) এসএসসি ও এর নিচে। মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোননি ৫০ জন (২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ)। শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘর পূরণ না করা ৩ জন প্রার্থীকে যোগ করলে এই সংখ্যা ৫৩ জন (২৯ দশমিক ৬১ শতাংশ)। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রার্থীর সংখ্যা ৫৮ জন (৩২ দশমিক ৪০ শতাংশ)। 

তুলনা করে দেখা যায়, ২০১৮ সালে স্বল্পশিক্ষিত প্রার্থীর হার ছিল ৬১ দশমিক ৪৫ শতাংশ, এবার ৪৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। উচ্চশিক্ষিত (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী) প্রার্থীর হার ২০১৮ সালের ২৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে এবার দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশে। 

পেশাসংক্রান্ত তথ্য

১২৩ জনের (৬৮ দশমিক ৭২ শতাংশ) পেশা ব্যবসা। ১১ জন (৬ দশমিক ১৫ শতাংশ) চাকরির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আইনজীবী ৬ জন (৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ)। ২০১৮ সালে ব্যবসায়ীর হার ছিল ৬৫ দশমিক ৬২ শতাংশ, এবার ৬৮ দশমিক ৭২। 

মামলাসংক্রান্ত তথ্য

৩৪ জনের (১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ) বিরুদ্ধে বর্তমানে, ৩৭ জনের (২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ) বিরুদ্ধে অতীতে ও ১৫ জনের (৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ) বিরুদ্ধে উভয় সময়ে মামলা আছে বা ছিল। ৩০২ ধারায় ৫ জনের (২ দশমিক ৭৯ শতাংশ) বিরুদ্ধে বর্তমানে ও ১০ জনের (৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ) বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারি মামলা ছিল। 

আয়সংক্রান্ত তথ্য

১০৮ জনের (৬০ দশমিক ৩৩ শতাংশ) বার্ষিক আয় ৫ লাখ টাকার কম। আয় উল্লেখ না করা ১৬ জনকে যোগ করলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৪ জনে (৬৯ দশমিক ২৭ শতাংশ)। কোটি টাকার ওপর আয় করেন ৩ জন (১ দশমিক ৬৮ শতাংশ)। বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্বল্প আয়ের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ হ্রাস পাচ্ছে এবং পাশাপাশি অধিক আয়ের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

সম্পদের তথ্য

৭৬ জন (৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ) ৫ লাখ টাকার কম সম্পদের মালিক। ৫ থেকে ২৫ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে ৫৪ জনের (৩০ দশমিক ১৭ শতাংশ), ২৫ থেকে ৫০ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে ১২ জনের (৬ দশমিক ৭০ শতাংশ), ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে ১২ জনের (৬ দশমিক ৭০ শতাংশ), ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে ১৫ জনের (৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ) এবং ৫ কোটি টাকার অধিক মূল্যমানের সম্পদ রয়েছে ২ জনের (১ দশমিক ১২ শতাংশ)। ৮ জন (৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ) সম্পদের তথ্য দেননি। এই ৮ জনকে বিবেচনায় নিলে স্বল্প সম্পদের অধিকারীদের সংখ্যা ৮৪ (৪৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ)।