প্রার্থীর পুলিশ কর্মকর্তা ভাইয়ের ভোটে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা

সম্ভাব্য প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তার প্রভাবে তাঁর ভাইয়েরা স্থানীয়ভাবে প্রভাব দেখিয়ে চলতেন।

ছোট ভাইয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামানফাইল ছবি

ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম নিতে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা ভাইকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন উপনির্বাচনের অপর প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই প্রার্থীর নাম মো. ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর ভাই মো. মনিরুজ্জামান খুলনা-বরিশাল বিভাগের ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি)। গত সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম নেওয়ার সময় মনিরুজ্জামান পুলিশের পোশাক পরিহিত ছিলেন।

এই উপনির্বাচনে দলীয় অন্যান্য মনোনয়নপ্রত্যাশী ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তার প্রভাবে তাঁর ভাইয়েরা স্থানীয়ভাবে প্রভাব দেখিয়ে চলতেন। এবার সংসদ উপনর্বাচনেও প্রভাব বিস্তার করতে তাঁরা এই পন্থা অবলম্বন করেছেন।

আরও পড়ুন

ঝিনাইদহ-১ আসনের টানা পাঁচবারের সংসদ সদস্য আবদুল হাই (৭২) বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় গত ১৬ মার্চ থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুর কারণে আসনটি শূন্য হওয়ায় ২৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৭ মে। আগামী ৫ জুন ভোট গ্রহণ হবে।

এই উপনির্বাচনে মোট ২৫ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম, শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এম হাকিম আহম্মেদ, শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আজম, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার প্রমুখ।

স্থানীয় লোকজন বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে এলাকার রাজনীতিতে দেখা না গেলেও পরিবারের সদস্যদের প্রতিষ্ঠিত করতে নানা সময় ভূমিকা রেখেছেন।

এ ব্যাপারে শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র ও উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী কাজী আশরাফুল আজম বলেন, তাঁরা পুলিশ ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে শৈলকুপায় নানা অপকর্ম করে বেড়ান। এবার পোশাক পরে দলীয় মনোনয়ন ফরম আনতে গেছেন, যেন অন্যরা ভয় পান। তিনি বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তার এই কর্মকাণ্ডে নির্বাচন প্রভাবমুক্ত হবে না। তিনি আগে থেকেই প্রভাব খাটাতে শুরু করেছেন।

এ ব্যাপারে ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মা–বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই হিসেবে তিনিই (পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান) অভিভাবক। আমার দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে বড় ভাই হিসেবে সেখানে গিয়ে বসে ছিলেন। এটা কোনো অপরাধ হতে পারে না। আর তিনি এলাকায় মনোনয়নপত্র জমা দিতেও আসেননি, ভোটও করতে আসেননি, যে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে। যাঁরা এ কথা বলছেন, তাঁরা আসলে ভোটে ভয় পাচ্ছেন।’