গাজীপুরে পারিবারিক দ্বন্দ্বে নানি ও নাতনির গায়ে আগুন

গাজীপুর জেলার মানচিত্র

নাতনিকে স্কুল থেকে নিয়ে নানি বাড়ি ফিরছিলেন। পথে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে তাঁদের শরীরে দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে ওই ছাত্রী ও তার নানি দগ্ধ হয়েছেন। আজ রোববার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকায়।

দগ্ধরা হলেন গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকার শফিকুল ইসলামের মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৩) এবং তার নানি ঝালকাঠির নলছিটি থানার কান্ডপাশা গ্রামের ইউনুস তালুকদারের স্ত্রী বেবি বেগম (৫৫)। বেবি বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে স্থানীয় হাজী নূরুল ইসলাম মডেল একাডেমিতে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। সে অন্য দিনের মতো আজ সকালে স্কুলে যায়। ছুটির পর বেলা একটার দিকে নানি বেবি বেগম তাকে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে শিরিরচালা পশ্চিম পাড়ার শাহজাহান মিয়ার বাড়ির পাশে কাঁঠাল বাগানে পৌঁছামাত্র আগে থেকে ওত পেতে থাকা শুভ মিয়া ও সাব্বির হোসেন নামের দুই যুবক পথ রোধ করেন। পরে তাঁদের গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। শুভ সানজিদার সৎ ভাই। সাব্বির হলো শুভর বন্ধু।

নানি ও নাতনির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাঁদের শরীরে পানি ঢেলে আগুন নেভান। পরে তাঁদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকেরা।

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বেলা দেড়টার দিকে দুজনকে দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে বেবি বেগমের গলা, শ্বাসনালিসহ শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গেছে। আর স্কুলছাত্রীর শরীরের বেশ কয়েক জায়গা পুড়ে গেছে। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পালিয়ে যাওয়া শুভ মিয়া নরসিংদীর মনোহরদী থানার আর্জুনচর গ্রামের সুলতান ফকিরের ছেলে আর সাব্বির হোসেন ময়মনসিংহের ভালুকা স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে।

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন জানান, আগুন দেওয়া দুই যুবক দগ্ধদের স্বজন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ওই ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা পালিয়ে গেছে। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু করেছে।