ভোটকেন্দ্র পেশিশক্তিমুক্ত রাখতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব নিতে হবে: সিইসি

যশোরে নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। শুক্রবার যশোরের শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র পেশিশক্তিমুক্ত রাখতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকেই মূল দায়িত্ব নিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আজ শুক্রবার যশোরে খুলনা ও ঢাকা বিভাগের নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সিইসি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রের ভেতরে আমরা কেউ থাকব না। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রিসাইডিং অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার—ওনারা থাকবেন। আজকের বৈঠকে কঠোরভাবে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যাতে কোনো অনিয়ম, কারচুপি, কোনো রকম দখলদারত্ব বা কোনো রকম পেশিশক্তির প্রয়োগ না হয়, সেটার জন্য তাঁদের যেন ব্যাপকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তাঁদের যেন জবাবদিহি করা হয়, সেই বার্তাটুকু রিটার্নিং অফিসারদের দেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন

সিইসি আরও বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসার যাঁরা আছেন, জেলা প্রশাসকেরা সাধারণভাবে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিভাগীয় কমিশনাররা রিটার্নিং অফিসার। রিটার্নিং অফিসারকেই কিন্তু মূল দায়িত্ব পালন করতে হবে। ওনারাই ইলেকশন কমিশন, ওনারাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সমস্ত ক্ষমতা ওনাদের ডেলিগেট করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের এই দায়িত্ব নিতে হবে, দায়িত্ব বহন করতে হবে এবং সুচারুভাবে, সুষ্ঠুভাবে দায়িত্বটা পরিসমাপ্ত করতে হবে।’

যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক মিলনায়তনে আজ সকালে খুলনা ও ঢাকা বিভাগের নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও যশোর জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর ২৯০ কর্মকর্তা অংশ নেন।

আরও পড়ুন

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আজ মাঠ প্রশাসনের যাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী—পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার-ভিডিপি সবার সঙ্গে তাঁদের মতবিনিময় হয়েছে। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল—তাঁদের কাছ থেকে শোনা, তাঁরা কীভাবে কাজ করছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে তাঁরা কোনো রকম বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন কি না, এগুলো তাঁরা জানতে চেয়েছেন। তাঁরা (নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা) যে সংবাদগুলো দিয়েছেন, মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে প্রচারণা এগিয়ে যাচ্ছে, অসুবিধা হচ্ছে না।

সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের তরফ থেকে তাঁদের বলেছি, যেকোনো মূল্যে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা যেন না হয়, শান্তিভঙ্গ যেন না হয়, পরিবেশটা যেন অনুকূল থাকে, যাতে করে ভোটার সাধারণ নির্বিঘ্নে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনভাবে ভোটকেন্দ্রে এসে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।’

আরও পড়ুন

নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা ঘটনাগুলোর খোঁজখবর রাখছি। আমরা এসব ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারাও সবাই সহযোগিতা করবেন। আপনাদের মাধ্যমে হয়তো আমরা এই তথ্যগুলো পাব। আমরা আপনাদের আশ্বাস দিচ্ছি, আমাদের তরফ থেকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করতে হবে এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন প্রতিহত করা হয়। হয়তো দু-চারটা ঘটনা ঘটবে, ব্যাপকভাবে যেন এই ঘটনাগুলো কোনোভাবেই না ঘটে, তাঁরা তাঁদের দায়িত্বজ্ঞান দিয়ে, প্রজ্ঞা দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে, বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এগুলো প্রতিহত করার চেষ্টা করবেন এবং বিধিবিধানগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করবেন।’

এ সময় নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ শরীফ, খুলনা রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মঈনুল হক, যশোরের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন