কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি ছুঁই ছুঁই করছে বিপৎসীমা
কুড়িগ্রামে কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। গতকাল বুধবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটে দুধকুমার নদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
নদ-নদীর পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের অনেকের ভিটেবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। ছোট শিশু ও গবাদিপশু নিয়ে অনিশ্চিত সময় পার করছে অনেক পরিবার। পানি বাড়ায় কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলানীপাড়া, বড়মানিপাড়া, ধনিটারী, অন্তাইপাড়, সেনপাড়া, পাটেশ্বরী গ্রাম, বোয়ালেরডারা, পৌরসভার পূর্ব সাঞ্জুয়ারভিটাসহ ১৫টি গ্রামের প্রায় ৩ হাজার, কালীগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর, ঢেবঢেবী, কুমেদপুর, কাঠগিরি, নুনখাওয়া ইউনিয়নের গরুভাসা, বারোবিশ গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৯টি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে অনেক চর প্লাবিত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এর মধ্যে দুধকুমার নদের পানি গতকাল রাত ১১টার পর বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও আজ সকালে তা কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৩২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদ নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার, তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৭৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খেয়ার আলগার চরের বাসিন্দা শাপলা বেগম বলেন, তিন দিন ধরে তাঁর বাড়িতে পানি। স্বামী ঢাকায় রিকশা চালাতে গেছেন। শিশুসন্তানকে নিয়ে পানিতে থাকতে ভয় লাগে। ঘুমের ঘোরে কখন সন্তান পানিতে পড়ে যায়, সেই ভয়ে সারা রাত ঘুম হয় না। দু-এক দিনের মধ্যে পানি না কমলে বাবার বাড়ি চলে যাবেন।