মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ১৫

শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ শনিবার ভোররাত ৪টা পর্যন্ত দুই হলের মধ্যবর্তী স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ শনিবার ভোররাত ৪টা পর্যন্ত দুই হলের মধ্যবর্তী স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরে খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আধিপত্য বিস্তার ও শুক্রবার জুমার নামাজের সময় দুই হলের দুই ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে কথা–কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আশরাফুল রায়হান নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। পথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল গেটের সামনে আশরাফুল রায়হান লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সেলিম আহমেদকে সাইড দেওয়ার কথা বলেন। এ সময় সেলিম আহমেদের সঙ্গে আশরাফুল রায়হানের ধাক্কা লাগে। নামাজ শেষে এ নিয়ে সেলিম ও রায়হানের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।

এ ঘটনার রেশ ধরে সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগের কর্মী আকরাম হোসেন, সালাউদ্দিন আহমেদসহ আরও কয়েকজন কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের কর্মী ফাহিম আবরারের ওপর হামলা করেন। এরপর রাত ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু হল–সংলগ্ন দোকানে কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী রাতের খাবার খেতে যান। এ সময় বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের কথা–কাটাকাটি হয়।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের হাতে লাঠিসোটা দেখা গেছে
ছবি: সংগৃহীত

একপর্যায়ে দুই হলের ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় লাঠিসোটা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, হল প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ‘আমি ঘটনাটা দেখেছি। যেহেতু দুই হলের শিক্ষার্থীরা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে, সে জন্য সভাপতিসহ বসে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাসার দাবি করেন, তিনি ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন। তবে তিনি শুনেছেন, দুই হলের শিক্ষার্থীরা ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সংগঠন থেকে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হলের ছেলেরা আমাদের হলে এসে হামলা চালায়। আমি হলের সবাইকে ভেতরে রাখার চেষ্টা করেছি। এ হামলার বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করেছে। এ সময় আহত নয় শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।