দালালির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধীদের সংগঠকসহ দুজন আটক, ইয়াবা উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জ সরকারি হাসপাতাল থেকে আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সংগঠক মো. জিদান (ডানে) ও দালাল ইকবাল হোসেনছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সংগঠকসহ দুজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে চারটি ইয়াবা বড়ি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ রোববার দুপুরে এ অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী।

আটক দুজন হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সংগঠক মো. জিদান ও হাসপাতালের দালাল হিসেবে পরিচিত ইকবাল হোসেন। আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মো. জিদানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে মো. জিদান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক পরিচয়ে হুমকি দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসছিলেন। পাশাপাশি তিনি হাসপাতালের অভ্যন্তরে ইয়াবা বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর রোববার দুপুরে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। অভিযানে হাসপাতালের ভেতর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সংগঠক মো. জিদান ও দালাল ইকবালকে আটক করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে চারটি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, জিদান নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক পরিচয় দেন। তিনি হাসপাতালে বিভিন্ন রোগী নিয়ে এসে নানাভাবে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করতেন। দালালদের কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হয়রানির শিকার হন। প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ায় দালালের উৎপাত কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন তিনি।

এদিকে এ ঘটনার পর বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটির আহ্বায়ক নিরব রায়হান ও সদস্যসচিব মোহাম্মদ জাবেদ আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিটির জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নীতি-আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় সদর থানা কমিটির সংগঠক মো. জিদানকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো। বহিষ্কৃত ব্যক্তির কোনো ধরনের অপকর্মের দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেবে না। জেলায় দায়িত্বরত সব পর্যায়ের ব্যক্তিদের তাঁর সঙ্গে সাংগঠনিক সর্ম্পক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলো।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নিরব রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, জিদান নারায়ণগঞ্জ সদর থানা প্রতিনিধি হিসেবে জেলা কমিটিতে ছিলেন। আটকের বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনকে বলা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে দালালি ও স্টাফদের হুমকি দিয়ে সুবিধা আদায় করতেন জিদান। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী জিদান ও ইকবালকে আটক করেছে। তাঁদের কাছ থেকে ছুরি ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।