ফরিদপুরে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করায় মহাসড়ক অবরোধ

ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন ছিল শুক্রবার। নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর সদরের বদরপুর এলাকায় রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরে মোটর ওয়ার্কার (মোটর শ্রমিক) ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচন স্থগিত করার প্রতিবাদে টায়ারে আগুন দিয়ে পরিবহনশ্রমিকেরা তিন ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে ফরিদপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ডের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ করেন।

দুই শতাধিক শ্রমিক সড়কে ইট দিয়ে ও একটি টায়ারে আগুন দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন। আগামীকাল শুক্রবার এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ফরিদপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দুই শতাধিক শ্রমিক কাঠ ও লাঠি নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। তাঁরা কোনো ধরনের যানবাহনকে ওই এলাকা অতিক্রম করতে দিচ্ছেন না। এ সময় ওই পথ দিয়ে দু-একটি ইজিবাইক চলাচলের চেষ্টা করলেও পুলিশের সামনে তাঁদের ধরে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ পুলিশ তাঁদের কোনো বাধা দিচ্ছে না। তবে রোগী বহনকারী দু-একটি ইজিবাইক পুলিশের কথায় অবরোধকারী শ্রমিকেরা যেতে দিচ্ছেন।

পরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এরপর শ্রমিকেরা সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে অবরোধ তুলে নেন।

এ অবরোধের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ে ওই পথ দিয়ে চলাচলকারী সর্বস্তরের জনগণ। তবে শহর বাইপাস দিয়ে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করেছে। ফরিদপুর ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের নার্স শামীমা নাসরিন (৩৪) বলেন, ‘আমার বাড়ি রাজবাড়ী। আমি বাড়ি যাচ্ছি। সঙ্গে তিনটা ব্যাগ। এখন কীভাবে যাব, সেটা ভাবছি।’

আরেক পথচারী সুজয় কর্মকার (২৯) বলেন, ‘শ্রমিকদের নির্বাচন হইলো কি না হইলো এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। তবে আমাদের কেন এ ভোগান্তিতে পড়তে হবে?’

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার ফরিদপুর মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে শহরের দক্ষিণ কোমরপুর মহল্লার বাসিন্দা ও শ্রমিক মো. মাহাবুবউদ্দিন মোল্লা ঢাকার দ্বিতীয় শ্রম আদালতে এ নির্বাচনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে একটি আবেদন করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদালতে চেয়ারম্যান জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল হামিদ গত বুধবার নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন।

মামলায় দ্বিতীয় পক্ষ করা হয়েছে শ্রমিক পরিচালকের দপ্তরের উপপরিচালক, ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার ইউনিয়নের সভাপতি জোবায়ের জাকির, নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির সদস্যসচিবকে। দ্বিতীয় পক্ষকে আগামী ২ জুলাই জবাব দিতে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের গোলাম মো. নাসির বলেন, ‘শুক্রবারের নির্বাচন হতেই হবে। যেকোনো মূল্যে আমরা এ নির্বাচন করতে চাই।’

ফরিদপুরের ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক তুহিন লস্কর বলেন, অবরোধ চললেও সীমিত পর্যায়ে ওই পথে গাড়ি চলছে। এ নির্বাচনের কমিশনার ও শ্রমিকনেতারা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।