আখাউড়া বন্দর দিয়ে আবার গম আমদানি শুরু, এল ১ হাজার টন

ভারত থেকে আমদানি করা গম ভারতীয় ট্রাক থেকে বাংলাদেশি ট্রাকে ওঠানো হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে আখাউড়া স্থলবন্দরে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আবার গম আমদানি শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে আগরতলা-আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ৪৭টি ট্রাকে ১ হাজার টন গম বন্দরে এসে পৌঁছায়। আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বন্দর থেকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে ১২ ট্রাক গম হস্তান্তর করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গম রপ্তানিতে ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর চলতি বছরের ৩০ মে থেকে গমের কোনো চালান আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকেনি। এতে নিষেধাজ্ঞার আগে ভারতে এলসি (ঋণপত্র) খোলা ১৪ হাজার টনেরও বেশি গম সেখানে আটকা পড়ে। পরে ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে আগরতলার সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে গমের গাড়ি আগরতলায় আসতে পারেনি।

আখাউড়া স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া মূলত রপ্তানিমুখী স্থলবন্দর। গত বছরের ২ আগস্ট প্রথমবারের মতো এ বন্দর দিয়ে গম আমদানি শুরু হয়। তখন প্রথম চালানে ৬৭টি ট্রাকে ১ হাজার ৩২০ টন গম দেশে আসে। এরপর চলতি বছরের মে মাসে আরও প্রায় দেড় লাখ টন গম বন্দরে পৌঁছায়।

এদিকে ভারতে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সচল হওয়ায় গত সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৭টি ট্রাকে ১ হাজার টন গম আখাউড়া বন্দরে পৌঁছায়। প্রতি ট্রাকে ২১ থেকে ২২ টন গম আছে। টাঙ্গাইলের ‘মেসার্স শারদা ট্রেডার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে এ গম আমদানি করে। টাঙ্গাইলের ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ‘আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল’ সেগুলো গ্রহণ করে। আজ বেলা তিনটা থেকে ভারতীয় ট্রাক থেকে বাংলাদেশি ট্রাকে গম ওঠানোর কাজ করেন ঢাকার ‘ড্রপ কমিউনিকেশন’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা।

মেসার্স শারদা ট্রেডার্সের প্রতিনিধি তারাপদ দাস জানান, ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর প্রতিষ্ঠান আড়াই হাজার টন গম আমদানির চুক্তি করে। এ জন্য ১২ মের আগে এলসি খোলা হয়েছিল। কিন্তু ভারী বৃষ্টি ও বন্যার কারণে গমের আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল চুক্তির প্রথম চালানে ১ হাজার টন গম আখাউড়ায় এসেছে। বাকি গম কয়েক দিনের মধ্যে চলে আসবে।

আখাউড়া বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আক্তার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ত্রিপুরার সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলোর সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হওয়ায় আবার গম আমদানি শুরু হয়েছে। প্রতি টন গম আমদানিতে খরচ হয়েছে ৩৫৫ মার্কিন ডলার। যেহেতু টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েছে, তাই বাজারে গমের দাম খুব একটা কমবে না। বিকেল পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫টি ট্রাকের গম ভারতীয় ট্রাক থেকে নামিয়ে বাংলাদেশি ট্রাকে ওঠানো হয়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আমদানি করা এসব গমের দাম ৩ লাখ ৫৫ হাজার মার্কিন ডলার। এসব গম ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, ভৈরবসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ১২টি ট্রাকের গম হস্তান্তর করা হয়েছে। গমের ট্রাকগুলো থেকে বন্দরে প্রবেশ ফি, ওজন ফি, ইয়ার্ড ফি, নথিপত্র ফি, অবস্থান ফিসহ অন্যান্য মাশুল আদায় করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।