দিনাজপুরের বীরগঞ্জের জাতীয় উদ্যান সিংড়া শালবন থেকে ১০টি পরিযায়ী শকুন অবমুক্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে বন বিভাগ শকুনগুলো অবমুক্ত করে। এর আগে বিভিন্ন জেলা থেকে গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এসব শকুন উদ্ধার করে শালবনে আনা হয়েছিল।
শকুনগুলোর পরিচর্যা করে ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ছেড়ে দেওয়া হয়। শকুনগুলোকে বিদায় জানাতে এসেছিল ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা।
শকুনগুলো অবমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) মুখ্য গবেষক এ বি এম সারোয়ার আলম, আইইউসিএন প্রতিনিধি সাকিব আহম্মেদ, কাজী জেনিফার আজমেরী, বিশ্বব্যাপী হুমকির সম্মুখীন প্রজাতি নিয়ে কাজ করা সেভ প্রকল্পের পরিচালক মি ক্রসি বাউডেন, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল-আল-মামুন প্রমুখ। শকুনগুলোকে বিদায় জানাতে শালবনে এসেছিলেন বিভিন্ন দর্শনার্থী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আইইউসিএনের গবেষক এ বি এম সারোয়ার আলম বলেন, ‘শকুনগুলো পরিযায়ী প্রজাতির। মূলত শীতকালে হিমালয় অঞ্চল থেকে আমাদের দেশে আসে। অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে আসার পর তারা দুর্বল হয়ে পড়ে। উড়তে না পেরে লোকালয়ে আটকা পড়ে। তাদের উদ্ধার করে আমরা খাদ্য ও চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করে থাকি। এ বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪৬টি শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। মূলত উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে এদের বেশির ভাগ উদ্ধার করা হয়। বীরগঞ্জ শালবন থেকে ১০টি শকুন অবমুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য সাফারি পার্কে কিছু শকুন রয়েছে। ২০১৪ সালে প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ২৪৯টি শকুন উদ্ধার করে চিকিৎসাসেবা দিয়ে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে।’
দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন বলেন, শকুনকে বলা হয়, প্রকৃতির ঝাড়ুদার। এটি উপকারী প্রাণী। শকুনের বংশবিস্তার এবং এর অস্তিত্ব রক্ষায় প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। কয়েক বছর থেকে সিংড়া শালবনে শকুনের পরিচর্যা করে ও চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে শীত শেষে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীটি রক্ষায় তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন। এবারই প্রথম শকুনগুলোর শরীরে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ডিভাইস লাগানো হয়েছে। এর মাধ্যমে এদের গতিবিধি ও সর্বশেষ অবস্থান জানা যাবে।