যমুনা রেলসেতুর পিলারে ‘ফাটলের’ ছবি ফেসবুকে, কী বলছে কর্তৃপক্ষ
যমুনা রেলসেতুর পশ্চিম প্রান্তে কয়েকটি পিলারের নিচে ‘ফাটল’ দেখা দেওয়ার কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে সেতুর নির্মাণকাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নানা মন্তব্য করছেন।
তবে রেলসেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা ফাটল নয়; বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে সৃষ্ট ‘হেয়ার ক্র্যাক’ বা ‘চুলের মতো’ ফাটল। এটি নির্মাণকাজের কোনো ত্রুটি নয়। এতে সেতুর কংক্রিটের অবকাঠামো বা স্থাপনার জন্য ক্ষতিকর না। ইতিমধ্যে দৃশ্যমান ফাঁকা স্থানগুলোতে রেজিন বা আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামতের কাজ চলছে।
যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী নাইমুল হক আজ শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, সেতুর পশ্চিম প্রান্তে ৮ থেকে ১০টি পিলারের নিচের অংশে কিছু জায়গায় ‘হেয়ার ক্র্যাক’ দৃশ্যমান হয়েছে। এটি নির্মাণকাজের কোনো ত্রুটি নয়। এতে সেতুর কংক্রিটের অবকাঠামো বা স্থাপনার জন্য ক্ষতিকর হবে না। ফলে ট্রেন চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না। একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে হেয়ার ক্র্যাককে আরও বড় দেখিয়ে ছবিগুলো ফেসবুকে পোস্ট করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ফাঁকা স্থানগুলো মেরামতের প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে যমুনা রেল সেতু কর্তৃপক্ষের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মার্ক হ্যাবি গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এটি তাঁদের কাজের কোনো ত্রুটি নয়। এমনকি নির্মাণ ত্রুটির কারণে এমনটি হয়েছে, তা-ও না। প্রচণ্ড গরম বা বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেতুর নিচে শূন্য দশমিক এক থেকে তিন মিলিমিটার পর্যন্ত ক্ষুদ্র ফাঁকা সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো সেতুর কংক্রিটের অবকাঠামো বা স্থাপনার জন্য ক্ষতিকর নয়। রেজিন বা আঠার মিশ্রণ দিয়ে এগুলো একে একে মেরামত করা হবে। এতে সেতুর কাঠামো বা ট্রেন চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না।
যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উজানে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল অংশে ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যানে দেশের বৃহত্তম ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। গত বছরের ১৮ মার্চ সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা, যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। বাকি অর্থ দিয়েছে সরকার। জাপানের ওটিজি ও আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে।