ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আরেক নেতার বিছানাপত্র নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. সামিউল আলম ওরফে পিয়াসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ও বিছানাপত্র হলের কক্ষ থেকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় প্রক্টর দপ্তরে ওই হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েমের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তিনি।

আজ সোমবার ছাত্র উপদেষ্টার দপ্তরেও একই অভিযোগ দিয়েছেন মো. সামিউল আলম। তিনি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ওই হলেই থাকেন। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে অবশ্যই জানতেন। সামিউল কারও রাজনৈতিক ইন্ধনে এই অভিযোগ দিয়ে থাকতে পারেন।

একটি অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক বলেন, এটি হলের ঘটনা। তিনি এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে অবগত করেছেন। হল প্রাধ্যক্ষ সাইখুল ইসলাম মামুন জিয়াদ মুঠোফোনে বলেন, ‘এখন কথা বলা যাবে না। মিটিংয়ে আছি।’ এরপর তিনি কল কেটে দেন।

অভিযোগে সামিউল আলম উল্লেখ করেন, চলতি মাসে সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে বঙ্গবন্ধু হলের ২১০ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ পান তিনি। সেখানে ওঠার পর ৪ মার্চ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলফাত সায়েমের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা এসএসসি মূল সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, ভিসার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্টের কাগজ ও বিছানাপত্র সব নিয়ে যান। ওই সময় তিনি কক্ষে ছিলেন না। হলে ফেরার পর তিনি আলফাত সায়েমের মুঠোফোনে কল দিয়ে এর কারণ জানতে চান। এ সময় বিষয়টি অস্বীকার করেন সায়েম।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩২৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন সামিউল আলম। তবে হলে তাঁর কোনো আবাসিকতা ছিল না। কয়েক মাস আগে ওই কক্ষের বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহানুর রহমানের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। এ জন্য তিনি ওই কক্ষে থাকতে চাচ্ছিলেন না। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে তিনি বিষয়টি জানিয়ে ওই কক্ষে না থাকতে চাওয়ার কথা বলেন।

তখন তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন গোলাম কিবরিয়া। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেন তিনি। ওই সময় গোলাম কিবরিয়া তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘ওই রুমে সোহান থাকবে, তা সে ওই গাঁজা ব্যবসা করুক আর মদ বিক্রি করুক। তোর বঙ্গবন্ধু হলে আর থাকার সুযোগ নেই।’ ওই ঘটনার পর থেকে তিনি হলের বাইরে ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে সামিউল নেশাগ্রস্ত। তিনি যে অভিযোগ দিয়েছেন তা মিথ্যা।

এদিকে আবাসনহীন হয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবি করে সামিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি চাই। আমার খোয়া যাওয়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফেরত চাই। হলে নিরাপত্তাসহ সিট চাই।’