ঘুমন্ত অবস্থায় সাপের ছোবল, ওঝার ঝাড়ফুঁক, পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু
ঘুমন্ত অবস্থায় সাপের ছোবলে প্রাণ হারালেন রিমা আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাব গ্রামে শোবার ঘরে তাঁকে সাপে ছোবল দেয়। আজ মঙ্গলবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত রিমা আক্তার ওই গ্রামের ফিরোজ মিয়ার মেয়ে ও আলতাফ হোসেনের স্ত্রী। তাঁর তিন বছর বয়সী একটি মেয়েশিশু রয়েছে। হঠাৎ মায়ের মৃত্যুতে তার কান্না থামছে না। এ ঘটনায় শোকে বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন স্বজনেরা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাতে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন রিমা। রাত সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ পায়ে তীব্র ব্যথা অনুভব করে ঘুম ভাঙে তাঁর। উঠে দেখতে পান, ঘরের মেঝেতে বড় একটি সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভয়ে চিৎকার দিলে স্বজনেরা ছুটে আসেন।
স্বজনেরা জানান, প্রথমে রিমাকে গ্রামের এক ওঝার কাছে নেওয়া হয়। কিন্তু ঝাড়ফুঁকে কোনো ফল না হওয়ায় দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনেরা। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে রিমার মৃত্যু হয়।
রিমার চাচা মানিক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিৎকার শুনে আমরা গিয়ে দেখি, অন্তত পাঁচ হাত লম্বা একটি সাপ মেঝেতে ঘুরছে। সেটির ভিডিও করেছি। তবে আমরা কেউ সাপটিকে চিনতে পারিনি। সাপটি মেরে ফেলতেও ভয় পেয়েছি। রিমাকে তার বাবা ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ না হওয়ায় পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পথেই তার মৃত্যু হয়।’
এ প্রসঙ্গে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পশ্চিম সোনাব গ্ৰামে সাপে কামড়ের ঘটনার কথা শুনেছি। তাঁরা কবিরাজের কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত এন্টিভেনাম আছে। দ্রুত সময়ে কবিরাজের কাছে না গিয়ে হাসপাতালে নিতে পারলে সাপে কাটার চিকিৎসা সম্ভব। লোকজনকে আরও সচেতন হতে হবে।’