নারায়ণগঞ্জে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও দুজনের মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্টিল রি-রোলিং মিলের তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনের কন্ট্রোলরুমে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়।
এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ মোট তিনজনের মৃত্যু হলো। দগ্ধ অপর দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন শরিফুল (২৬) ও মো. সাইফুল (৩০)। শরিফুল রংপুর কোতোয়ালি থানার আফসাদপুর এলাকার সমশেদ মিয়ার ছেলে এবং সাইফুল শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নূর ইসলামের ছেলে। এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে মারা যান মো. মোজাম্মেল (৩০)। তিনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বিশগিরীপাড়া গ্রামের মৃত নূর হোসেনের ছেলে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে শরিফুলের শরীরের ৫৭ শতাংশ ও সাইফুলের ৬২ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। চিকিৎসাধীন অপর দুজনের মধ্যে ইকবালের ৩০ শতাংশ ও জাকারিয়ার ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁরা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।
থানায় অভিযোগ না দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে নিহত শরিফুলের বাবা সমশেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে শরিফুল ওই কারখানায় রড তৈরির কাজ করতেন। ভাগ্যে ছিল, ওইভাবে ওর মৃত্যু হয়েছে। কারখানার মালিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাঁদেরকে দুই লাখ টাকা দিয়েছেন।
নিহত সাইফুলের দূর সম্পর্কের চাচা জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। কেউ তো ইচ্ছাকৃত ঘটনা ঘটায়নি। এ কারণে তাঁরা কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। গোসল করানো শেষে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল সৈয়দপাড়া এলাকায় অবস্থিত শারমিন স্টিল রি-রোলিং মিল লিমিটেডে বিস্ফোরণ ঘটে। তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনে অতিরিক্ত চাপে কারখানাটির কন্ট্রোল রুমে বিস্ফোরণে দেয়াল উড়ে গেছে। এতে কন্ট্রোল রুমের পাশে ঘুমিয়ে থাকা পাঁচ শ্রমিক দগ্ধ হন। খবর পেয়ে আদমজী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের দুটি ইউনিট পৌনে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দগ্ধ ব্যক্তিদের গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে রাজধানীতে অবস্থিত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।