লাশ
প্রতীকী ছবি

সিলেটে কলেজছাত্রী (২১) হত্যার ঘটনার পর দুই দিন পার হয়ে গেছে। তবে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। গতকাল সোমবার ওই তরুণীর ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে সিলেট নগরে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে রোববার দুপুরে ওই তরুণীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে তরুণীর মামাতো ভাই পলাতক। তাঁকে আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।

গত রোববার দুপুরে সিলেট নগরের একটি চারতলা ভবন থেকে ওই তরুণীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তরুণীর হাত ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। ওই তরুণী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খুলিয়াটুলা এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। তবে কিছুদিন ধরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ওই তরুণী স্থানীয় আঞ্চলিক নাটকে অভিনয় করতেন। পলাতক ওই স্বজনের বাড়ি হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায়।

নিহত তরুণীর মায়ের দাবি, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে কয়েক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে হত্যাকারী। তবে মেয়েকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, সেটা তিনি বুঝতে পারছেন না।
সুরতহালে অংশ নেওয়া পুলিশ ও হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই তরুণীকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রাথমিক কিছু আলামতের ভিত্তিতে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়র জন্য ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

নিহত তরুণীর স্বজনদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই তরুণীর কাছে বেশ কিছু টাকা ছিল। এদিকে সপ্তখানেক আগে ওই তরুণীর মামাতো ভাই হবিগঞ্জ থেকে সিলেটে তাঁদের বাড়িতে ওঠেন। গত শনিবার রাতে ওই তরুণীর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এতে ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে যাওয়া–আসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। গত রোববার সকালেও পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ছিলেন। ওই সময় ওই তরুণীর, তাঁর ভাবি ও ওই মামাতো ভাই ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে ওই তরুণীর ভাবি ঘরে ঢুকে ওই তরুণীকে রক্তাক্ত অবস্থায় খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার দুপুরে নিহত তরুণীর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ওই তরুণীর স্বজনকে আটক করতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে। তবে এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের আগে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, জানতে চাইলে আজবাহার আলী শেখ বলেন, হত্যার আগে যৌন নির্যাতন হয়েছিল কি না, সেটা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের কাছে প্রতিবেদনটি চাওয়া হয়েছে।