রাজশাহীতে বিজ্ঞান উৎসব শুরু

রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। আজ সকাল সাড়ে ৯টায়
ছবি: শহীদুল ইসলাম

রাজশাহীতে বিজ্ঞান উৎসব শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। ‘বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা’ শিরোনামে প্রথম আলোর বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘বিজ্ঞানচিন্তা’ ও মুঠোফোনভিত্তিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’ যৌথভাবে এই উৎসবের আয়োজন করছে।

ভেন্যু প্রধান ও রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মোহা. আবদুল খালেক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। উৎসবে ‘বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা’ পতাকা উত্তোলন করেন বিকাশের ইভিপি ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স হুমায়ূন কবির। এ সময় জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. সাহেদ জামান। অনুষ্ঠানটি আয়োজনে সহযোগিতা করছে রাজশাহী বন্ধুসভা।

স্বাগত বক্তব্যে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ মোহা. আবদুল খালেক বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫২ বছরে পদাপর্ণ করেছে। এই সময়ে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু আরও অনেক দূর যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের যে রূপকল্প ঘোষণা করেছেন, সেখানে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার কথা বলেছেন। উন্নত, সমৃদ্ধশালী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে বিজ্ঞানমনষ্ক জাতি দরকার। সেটি বাস্তবায়ন করতে হলে এই তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন। এই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সরকার কাজ করছে। সরকারের বাইরে প্রথম আলোর বিজ্ঞানচিন্তা, বিকাশ কাজ করে যাচ্ছে। এটাকে একটি আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।

এক গবেষণার উদাহরণ টেনে বিকাশ কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির বলেন, এক গবেষণায় দেখা গেছে, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত দেশের শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বিভাগে যেতে চায়। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির পরে সবাই ব্যবসায় শিক্ষা পড়তে চায়। এভাবে দেশের অনেক শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানে থেকে ঝড়ে পড়ছে। দেশও পিছিয়ে যাচ্ছে। সেই পিছিয়ে পড়া রোধে এবং বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বিকাশ কাজ করে যাচ্ছে। সেই প্রচেষ্টায় বিজ্ঞানচিন্তাকে তাঁরা পাশে পেয়েছেন। এ কারণেই দেশব্যাপী এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেন আগামী প্রজন্ম বিজ্ঞানমনস্ক হয়, দেশকে এগিয়ে নেয়।

উৎসবের উদ্বোধনের সময় অধ্যাপক সাহেদ জামান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজকে দেশের সবমিলিয়ে ১৯-২০ কোটি মানুষ। এটা এদেশের বিশাল সম্পদ। কিন্তু সঠিক চিন্তা ও গাইডলাইনের অভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না। এ জন্য পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। প্রথম আলোর বিজ্ঞানচিন্তা ও বিকাশ সেখানে এগিয়ে এসেছে। আরও উদ্বুদ্ধ করার জন্য সরকার ও অন্যদের এগিয়ে আসতে হবে।’

উদ্বোধনী মঞ্চে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জহিরুল ইসলাম, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, রাজশাহী ম্যাথ ক্লাবের সভাপতি মো. মাসুদ রানা প্রমুখ।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ‘বিজ্ঞানে বিকাশ’ স্লোগান সামনে রেখে দেশব্যাপী সাতটি বিভাগীয় শহরে হচ্ছে আঞ্চলিক উৎসব। স্কুলের শিক্ষার্থীরা (ষষ্ঠ-দশম শ্রেণি) বিজ্ঞান প্রজেক্ট ও কুইজ প্রতিযোগিতা—দুই ক্যাটাগরিতে অংশ নিতে পারবে এ উৎসবে। পরে ঢাকার জাতীয় উৎসবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে আঞ্চলিক উৎসবে বিজয়ীরা। প্রতিটি উৎসবের বিজয়ীদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার। পাশাপাশি আগ্রহীদের জন্য প্রতিটি আয়োজনে থাকছে বিজ্ঞানবিষয়ক বইয়ের প্রদর্শনী ও বিক্রির ব্যবস্থা।

উদ্বোধন শেষে সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীদের কুইজ পরীক্ষা ও প্রজেক্ট প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শেষে কলেজ অডিটরিয়ামে হবে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান। সেখানে নাচ-গানের পাশাপাশি ম্যাজিক দেখাবেন রাজীব বসাক। বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হবে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রশ্নোত্তর পর্ব। দুপুরে কুইজ পরীক্ষা ও প্রজেক্টের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।