আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধরের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

জামালপুর জেলার মানচিত্র

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রার্থীকে সমর্থনের জেরে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রকিবুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় শাখা ছাত্রলীগের আট নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মারধরের শিকার ওই নেতার নাম আল মামুন। তিনি উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক–বিষয়ক সম্পাদক। আল মামুন দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান হোসেনের সমর্থক ছিলেন। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সোলায়মানের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জেরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে মামুনকে মারধর করা হয়েছে। রকিবুল বিজয়ী প্রার্থী মো. আবুল কালাম আজাদের ভাতিজা ও সমর্থক।

গত মঙ্গলবার রাতে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশনে পৌঁছান মামুন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দেওয়ানগঞ্জ পৌর শহরের বটতলা এলাকায় রকিবুলের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে মামুনকে মারধর করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সোলায়মান হোসেনকে সমর্থন দেওয়ায় নির্বাচনের আগে থেকেই মামুনকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন আবুল কালাম আজাদের ভাতিজা রকিবুলসহ কয়েকজন। নির্বাচনের পর তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার রাতে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশনে পৌঁছান মামুন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দেওয়ানগঞ্জ পৌর শহরের বটতলা এলাকায় রকিবুলের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে মামুনকে মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে আল মামুন বলেন, ‘নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে আমার ওপর হামলা হয়েছে। আমি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন না দিয়ে মো. সোলায়মানকে সমর্থন দেওয়ার জেরে আমাকে মারধর করা হয়। এতে আমি গুরুতর আহত হয়েছি। আগামীকাল চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ যাব। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

তাঁর (মামুন) সঙ্গে আমার কোনো ধরনের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তাঁরা মোটরসাইকেল প্রতীকের (মো. সোলায়মান) নির্বাচন করছে আর আমরা ঘোড়ার প্রতীকের (আবুল কালাম আজাদ) নির্বাচন করছি। আমাদের বিজয়ী প্রার্থীর সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য ওই সব অভিযোগ করছেন মামুন।’
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রকিবুল হাসান

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রকিবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘ওই রাতে আমরা রুটি খেয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম। এ সময় দেখি আল মামুন ভাইয়ের সঙ্গে কয়েকজন নেশাখোর ছেলের ধস্তাধস্তি হচ্ছে। আমাদের মোটরসাইকেলের লাইট দেখে ওই নেশাখোররা পালিয়ে যায়। তখন আমরা মামুন ভাইকে এগিয়ে দিই। তাঁর সঙ্গে আমার কোনো ধরনের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তাঁরা মোটরসাইকেল প্রতীকের (মো. সোলায়মান) নির্বাচন করছে আর আমরা ঘোড়ার প্রতীকের (আবুল কালাম আজাদ) নির্বাচন করছি। আমাদের বিজয়ী প্রার্থীর সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য ওই সব অভিযোগ করছেন মামুন।’

ওই মামলায় ইতিমধ্যে এক আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।