‘যে গর্বিত ইতিহাস আমাদের রয়েছে, তা বিশ্বের কম জাতিরই রয়েছে’

যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন লেখক শারমিন আহমেদ। আজ সন্ধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে ও লেখিকা শারমিন আহমদ বলেছেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের যে গর্বিত ইতিহাস আমাদের রয়েছে, তা বিশ্বের কম জাতিরই রয়েছে। আমাদের এই গর্বিত ইতিহাস জানতে হবে, নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। এই ইতিহাস সংরক্ষণ করতে হবে।’

আজ শনিবার সন্ধ্যায় যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠানে শারমিন আহমদ এ কথা বলেন।
যশোরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের তেমন ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, স্বাধীন দেশের প্রথম জনসভা হয়েছিল যশোরের টাউন হল ময়দানে। যে কারণে এই জায়গা ঐতিহাসিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ জায়গাটিতে তিনি দেখেছেন গরু চরাচ্ছেন লোকজন। স্থানটা সঠিকভাবে সংস্কার করা হচ্ছে না। যাঁরা ওই ঐতিহাসিক জনসভায় বক্তব্য দিয়েছিলেন, তাঁদের নাম, ছবি ও বক্তব্য সংরক্ষণ করার জন্য তিনি প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

তানভীর মোকাম্মেলের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রগুলো যশোরে প্রথমবারের মতো প্রদর্শন করা হলো।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল শাহ, আকাশের মুক্তিযুদ্ধ প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতা সগির মোস্তফা প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের ওপর নির্মিত ছয়টি প্রামাণ্যচিত্র নিয়ে দুই দিনব্যাপী এই প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী গতকাল শুক্রবার বিকেলে শুরু হয়। প্রথম দিনে ‘মুজিবনগর: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সরকার’, ‘বীর চট্টলার প্রতিরোধ যুদ্ধ’ ও ‘বিলোনিয়ার যুদ্ধ’ এই তিন প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আজ সমাপনী দিনে ‘জনযুদ্ধ ৭১’, ‘আকাশে মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘একাত্তরের নৌ-কমান্ডো’ শিরোনামের তিনটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

তানভীর মোকাম্মেলের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই প্রামাণ্যচিত্রগুলো যশোরে প্রথমবারের মতো প্রদর্শন করা হলো। প্রতিটি প্রামাণ্যচিত্রের দৈর্ঘ্য ৬০ মিনিট। এসব প্রামাণ্যচিত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধে কীভাবে ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, একই সঙ্গে জল-স্থল ও আকাশপথে রণকৌশল, গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার সচিত্র উঠে এসেছে।

এই প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীতে শহরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। প্রামাণ্যচিত্রগুলো দেখে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের নতুন নতুন তথ্য জানতে পারেন দর্শকেরা।