স্থবিরতার অভিযোগে বিলুপ্ত, অথচ সেই কমিটি গঠন হয়নি দুই বছরেও

লক্ষ্মীপুর জেলার মানচিত্র

সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতার অভিযোগে লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয় প্রায় দুই বছর আগে। অথচ নতুন করে সেই কমিটি এখনো গঠন করা হয়নি। দলীয় পদ না থাকায় নেতাদের মধ্যেও কোনো কর্মসূচি আয়োজন বা অংশগ্রহণের তাগিদ নেই। তাঁরা এখন পদ পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় যুবলীগের কাছে দেড় শতাধিক পদপ্রত্যাশী নেতা–কর্মী জীবনবৃত্তান্তও জমা দিয়েছেন।

কমিটির পদপ্রত্যাশী ও সাবেক কমিটির তিন নেতা বলছেন, স্থবিরতার অভিযোগে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল। অথচ দীর্ঘদিন কমিটি ঘোষণা না করার কারণে প্রকৃতপক্ষেই সংগঠনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

২০২১ সালের ২ অক্টোবর কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লক্ষ্মীপুর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বিলুপ্তির কারণ হিসেবে সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা ও দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু তাহেরের ছেলে এ কে এম সালাহ উদ্দিন বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি এবং আবদুল্লাহ আল নোমান সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত ২৫ এপ্রিল রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দার বাজার এলাকার নাগেরহাট সড়কে আবদুল্লাহ আল নোমানকে হত্যা করা হয়। ওই সময় নোমানের সহযোগী রাকিব ইমামও খুন হন।

জেলা যুবলীগের পদপ্রত্যাশী অন্তত তিনজন বলেন, ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়। বিলুপ্তির আগপর্যন্ত চার বছরেও জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি তাঁরা। বিভিন্ন সময়ে যুবলীগের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীরা কেন্দ্রে নানা অভিযোগ দিয়েছেন এই কমিটির বিরুদ্ধে। জেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি তো দূরের কথা, পাঁচটি উপজেলা ও চারটি পৌরসভায়ও সম্মেলন করতে পারেনি যুবলীগের ওই কমিটি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা যুবলীগের কমিটিতে সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশী নেতা–কর্মীরা হলেন জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বায়েজীদ ভূঁইয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল আজিম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ জামান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি চৌধুরী মাহমুদুন্নবী, রুপম হাওলাদার প্রমুখ।

জানতে চাইলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান গতকাল শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা–কর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তি জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।