আ.লীগ-জেপি সংঘর্ষ, উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর, আহত ১৫

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌর শহরের থানা সড়কে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গতকাল রাতে
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা-কর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাতে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলামের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় লোকজন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার তেলিখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির (জেপি) ইফতার মাহফিল ছিল। ইফতার শেষে জাতীয় পার্টির নেতারা ফেরার পথে জুনিয়া গ্রামের মির্জাবাড়ির সামনে হামলা করেন স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। এতে জাতীয় পার্টির দুই কর্মী আহত হন। এ সময় একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়।

এ ঘটনার জের ধরে রাত নয়টার দিকে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা উপজেলা সদরে এসে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলামের ছবিসংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর থানা সড়কে মিরাজুল ইসলামের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। কলেজ সড়কে অবস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতেও হামলার চেষ্টা হয়। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের বাধা দিতে গেলে তাঁদের হামলায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অন্তত ১৩ জন আহত হন। এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনার পর রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।

ভান্ডারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর দল জাতীয় পার্টির (জেপি) বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ বিরোধের জের ধরে গতকাল সন্ধ্যা ও রাতে দুই দলের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম বলেন, তেলিখালীতে একটি ইফতার পার্টি শেষে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ভান্ডারিয়ায় ফেরার পথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সামান্য দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এরপর রাতে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা তাঁর ব্যবসায়িক কার্যালয় ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।

উপজেলা জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ইফতার পার্টি শেষে ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এতে তাঁদের দুজন কর্মী আহত হন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাড়ি, ব্যবসায়িক কার্যালয় কিংবা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের হামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাঁরা হামলার ঘটনায় মামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর পুলিশ ও র‌্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।