অবশেষে ৮ মাসের বেতন পেলেন সিলেটের ‘খলিল মামু’

কেয়ারটেকার কাম নাইটগার্ড খলিল আহমদছবি: প্রথম আলো ফাইল

সিলেটের কবি নজরুল অডিটরিয়ামের কেয়ারটেকার কাম নাইটগার্ড খলিল আহমদ ১৩ মাস পর অবশেষে বেতন পেলেন। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর হাতে আট মাসের বকেয়া বেতন তুলে দেওয়া হয়। অবশিষ্ট বকেয়া পর্যায়ক্রমে তাঁকে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘১৩ মাস বেতন বন্ধ, সংসার চলে না সিলেটের খলিল মামুর’ শীর্ষক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের অধীন মাস্টাররোলে কর্মরত খলিল আহমদের বকেয়া টাকা পরিশোধের উদ্যোগ নেয় নেজারত শাখা। এরই অংশ হিসেবে গতকাল তাঁর হাতে আট মাসের বকেয়া বাবদ ১ লাখ ৯ হাজার ৩০০ টাকা তুলে দেওয়া হয়।

বকেয়া বেতন পেয়ে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে খলিল আহমদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতি মাসে নেজারত শাখায় যোগাযোগ করেও বকেয়া বেতন পাইনি। প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের পর ডিসি স্যার আমার বেতন নিয়মিত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আট মাসের বকেয়া বেতন একসঙ্গে পেয়েছি।’

আরও পড়ুন

সিলেট জেলা প্রশাসনের পরিচালনাধীন নজরুল অডিটরিয়ামের অবস্থান নগরের রিকাবিবাজার এলাকায়। প্রায় ৭০০ আসনবিশিষ্ট এ মিলনায়তনেই মূলত শহরের সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতিসংক্রান্ত অনুষ্ঠানগুলো হয়ে থাকে। আর এখানেই ২০২২ সালে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরিতে ঢোকেন খলিল আহমদ। সাহিত্য-সংস্কৃতিকর্মীদের কাছে তিনি ‘খলিল মামু’ নামে সুপরিচিত।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, মিলনায়তন ভাড়া বাবদ জেলা প্রশাসন নিয়মিত টাকা পেলেও ‘অজানা কারণে’ খলিল আহমদের বেতন বন্ধ ছিল। এমনকি ‘ফান্ড সংকটের’ অজুহাতে মিলনায়তনের বিদ্যুৎ বিলের প্রচুর টাকাও বকেয়া রেখেছে তৎকালীন জেলা প্রশাসনের দায়িত্বরত ব্যক্তিরা।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘প্রথম আলোর অনলাইনে প্রতিবেদনটি দেখে খলিল আহমদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে পারি। পরে তাঁর বেশির ভাগ বকেয়া পরিশোধ করা হয়। অবশিষ্ট বকেয়া দ্রুতই তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া এখন থেকে তিনি (খলিল) যেন নিয়মিত বেতন পান, সেটাও নিশ্চিত করা হবে।’

এ বিষয়ে সিলেটের সংস্কৃতি ও নাট্যব্যক্তিত্ব আমিরুল ইসলাম চৌধুরী (বাবু) বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা খলিল মামুর বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়ায় জেলা প্রশাসককে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’