ফুটপাতের বদলে সিলেটের হকাররা পেলেন নতুন ঠিকানা

সিলেট নগরের হকারদের অস্থায়ী মার্কেটে পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নগর ভবন লাগোয়া লালদীঘির পাড়ের মাঠে হকারদের জন্য অস্থায়ী মার্কেট নির্মাণ করে দিয়েছে সিটি করপোরেশনছবি: প্রথম আলো

সিলেটে হকারদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নগরের লালদীঘিরপাড় এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের জন্য সম্প্রতি নির্মিত অস্থায়ী মার্কেটে হকারদের ব্যবসার জায়গা করে দেওয়া হয়। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় এ পুনর্বাসন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

নির্বাচিত হওয়ার পরপরই মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হকারদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন। সম্প্রতি প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নগর ভবনের পাশের লালদীঘিরপাড় এলাকায় অস্থায়ী বিপণিবিতান (মার্কেট) নির্মাণ করা হয়। সেখানে মাটি ভরাট, ইটের সলিং, বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থাসহ সব কাজ শেষে আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানটি হকারদের ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ বিপণিবিতানে প্রায় আড়াই হাজার হকার একসঙ্গে বসে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন বলে সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

পুনর্বাসন কার্যক্রমের উদ্বোধন করে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ছোট ব্যবসা করে তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করেন। তাঁরা চুরি-ডাকাতি করেন না। এ জন্য তাঁদের সম্মানের চোখে দেখতে হবে। হকাররা শুধু হকার নন, তাঁরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, তাঁরা আমাদের ভাই, আমাদের পরিজন, তাঁদের সহযোগিতা করতে হবে। তাই উচ্ছেদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন হকারদের পুনর্বাসনও করছে।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, কাউন্সিলর শান্তুনু দত্ত ও আবদুল মুহিত জাবেদ, নারী কাউন্সিলর শাহানা বেগম, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবদুর রকিব। উদ্বোধন শেষে মেয়র মার্কেট পরিদর্শনের পাশাপাশি কয়েকটি দোকান থেকে কিছু কেনাকাটাও করেন।

মেয়র উদ্বোধনী বক্তব্যে হকারদের উদ্দেশে বলেন, ক্রেতাদের সঙ্গে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে তাঁদের মন জয় করতে হবে। তবেই এখানে ক্রেতারা আসবেন। ক্রেতারা এলে ব্যবসা ভালো হবে। আপনার পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে পারবেন। এই মার্কেটের প্রচারণাসহ যত ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে করা হবে।

অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তোফায়েল আহমদ, ফজলে রাব্বি, জয়নাল আবেদীন, রুহেনা আক্তার, আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাউর রহমান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান, আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম, বিজয় কুমার দেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে যোগাযোগ করলে সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর প্রথম আলোকে জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সব হকারকে স্ব–উদ্যোগে নির্দিষ্ট স্থানে পুনর্বাসিত হওয়ার অনুরোধ করেছেন মেয়র। এরপর বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি কোনো হকার রাস্তা কিংবা ফুটপাতে বসেন, তখন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উদ্বোধনী দিনেই অন্তত এক হাজার হকার পুনর্বাসিত হয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যে অন্যান্য হকারও পুনর্বাসিত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এদিকে নগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরবাজার ও জিন্দাবাজার এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রাস্তা ও ফুটপাতে কোনো হকার দেখা যায়নি।